পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

কি প্রেম ও সরলতাময় সলজ্জ চাহনী, আর কথা বলিবার কি সুন্দর ভঙ্গি!

 এস শান্তিদায়িনী আমার এই আলাময় গৃহ কক্ষে! আমার এ পাপকলুষিত গৃহে পূণ্যের চিরবসন্ত ফুটিয়া উঠুক। এস আমার এই তাপিত বক্ষে, আমার এ অগ্নিময় হৃদয় শান্ত হউক।

 আঃ! কি তৃপ্তি এখনি অনুভব করিতাম, যদি চিত্রে চিত্রিত এই মূর্ত্তি, এই মূহুর্ত্তে জীবনময়ী, ভাষাময়ী হইয়া উঠিত! আমার সর্ব্বস্ব একদিকে। আর আনার! তুমি একদিকে। আমার এ অতুল ঐশ্বর্যা, পদগৌরব, সমাজে সম্ভ্রম, রাজদ্বারে প্রতিষ্ঠা, সবই যদি তোমার রাতুল চরণে সমর্পণ করি, তাহা হইলেও কি তোমাকে আমি পূণ্যময়ী পত্নী রূপে পাইব না?

 তুমি আমার প্রতিবেশিনী। প্রথম কিশোরে কতবার তোমায় দেখিয়াছি, কিন্তু তখন ত তোমার এ বিশ্ব বিমোহন সৌন্দর্য্য ছিল না। তোমার কিশোর-যৌবনের সন্ধিস্থলে, আবার দেখিয়াছি, তখনও আমার এ হৃদয় কপাট রুদ্ধ ছিল, নেত্র অন্ধ ছিল। দেখার মত করিয়া তখন ত কিছুই দেখি নাই! তোমাদের অবস্থা এখন মন্দ হইয়াছে, এজন্য অনেক সময় তোমাদের অবজ্ঞার চক্ষে দেখিতাম। এক সর্ব্বনাশিনী মোহিনীর মায়ার ফাঁদে পড়িয়া, আমি যে একেবারে অন্ধ হইয়া আছি!

 না—না, আনারউন্নিসা! আমি তোমায় চাই। যে উপায়ে পারি, তোমায় আমি আপনার করিব। তোমাকে আমার জীবনের সঙ্গিনী করিব। আরাধ্য দেবী করিব।”

৫১