পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 আবেগভরে নবাব সুজা থাঁ, শেষের এই কথাগুলি খুব উচ্চৈঃস্বরে বলিয়া উঠিয়াছিলেন। সে কথাগুলি লুফিয়া লইয়া কে যেন দ্বার পার্শ্ব হইতে বলিল—“বটে বিশ্বাসঘাতক! এই তোমার ভালবাসা! এই তোমার প্রতিশ্রুতির মূল্য?”

 নবাব সুজা বেগ দেখিলেন— বাহারবানু তাঁহার সম্মুখে দাঁড়াইয়া। একটা উপেক্ষার হাসি তাহার ওষ্ঠাধরে ফুটাইয়া তুলিয়া, স্থিরভাবে সে তাঁহার সম্মুখে দাঁড়াইয়া আছে।

 বাহারকে দেখিয়া, নবাব সুজা বেগ একটু চমকিত হইয়া উঠিলেন। পরক্ষণেই মুখের সে ভাবটা পরিষর্ত্তন করিয়া, হাস্য মুখে বলিলেন,—“আবার কি মনে করিয়া আজ আবার আসিলে?”

 বাহারবানু সেই স্থানে দাঁড়াইয়াই বিদ্রূপপূর্ণ স্বরে বলিল— “কেন আসিয়াছি, তাহা কি বুঝিতে পারিলে না নবাব সুজা বেগ?”

 সুজা বেগ বাহারের হাত ধরিয়া তাহাকে কাছে বসাইতে গেলেন। সে বসিল না। বলিল—“এই আগরা সহরের একজন ধনীশ্রেষ্ঠ ওমরাহের প্রতিশ্রুতির মূল্য কতটা অল্প, সেটা যতক্ষণ না জানিতেছি, ততক্ষণ তোমার কোন কথাই শুনিব না?”

 নবাব সুজা বেগ, একথায় বড়ই বিরক্ত হইয়া উঠিলেন। একটু রুষ্ট স্বরে বলিলেন—“যে প্রতিশ্রুতি করিতে পারে, সে প্রয়োজন হইলে সে প্রতিশ্রুতি পালন না ও করিতে পারে?”

৫২