পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

জামাল খাঁর কি একটা আত্মীয়তার সম্পর্কও ছিল। কাজেই উভয় পরিবারের মধ্যে মাখামাখি ভাবটা একটু জমাট ছিল।

 সেই প্রাসাদ তুল্য অট্টালিকার একটী নির্জ্জন কক্ষে বসিয়া আনার উন্নিসা ও সুজা আলি বেগ নির্জ্জনে কথোপকথন করিতেছিলেন।

 কক্ষটী সুগন্ধি দীপে আলোকিত। তীব্র আলোকছটা সুরূপা আনারের মুখের উপর পড়িয়াছে। তাহার সাঁচ্চা কাজ করা ফিরোজা রঙ্গের সুন্দর ওড়না খানির উপর দীপচ্ছটা পড়ায় স্বভাব সুন্দরী এই আনারকে যে সৌন্দর্য্য দিয়া সাজাইয়াছেন, তাহা যেন আরও সমুজ্জ্বল হইয়াছে।

 সুজা বেগ সহাস্য মুখে বলিল— “আনার উন্নিসা! আজ তোমাদের অনর্থক কষ্ট দিলাম।”

 আনার সহাস্য মুখে বলল—“এত আপ্যায়ন ও যত্নে যদি কষ্ট হয়, এত তরিবতী খাওয়া দাওয়ানতে যদি অসুখের কারণ উপস্থিত হয়, তাহা হইলে সুজা সাহেব! এরূপ কষ্ট আমি কেন— অনেকেই স্বেচ্ছায় উপভোগ করিতে চাহিবে। যাক্‌—আজ আমরা বিদায় হই। আমার পিতা বোধ হয় রাত বেশী হইতেছে দেখিয়া, একটু উৎকণ্ঠিত হইতেছেন। কারণ সকাল সকাল শয্যা আশ্রয় করাই তাঁর নিয়ম”

 সুজা বেগ একটু অপ্রতিভ ভাবে বলিলেন—“হয়তো তাই! যাই হক আনার! এতক্ষণ যখন অপেক্ষা করিয়াছ, তখন আরও একটু অপেক্ষা কর।”