পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

রত্নগুলি লুণ্ঠিত হয়—তবে কোন গতিকে তাঁহার প্রাণটা বাঁচিয়া যায়। তিনি বহুদিন পরে, বহু কষ্টে, রুগ্ন ও ভগ্ন দেহে বিষণ্ণ মনে, আবার গৃহে ফিরিয়া আসেন।

 সর্ব্বাপেক্ষা কষ্টের কথা এই, যে দস্যু লুণ্ঠিত পণ্য মধ্যে কয়খানি বহুমূল্য হীরক, তাঁহার নিজের সম্পত্তি নহে। তাহার মধ্যে, তাঁহার অন্তরঙ্গ বন্ধু মধ্যে গণ্য, আরও দুইজন মহাজনের কয়েকখানি হীরা ছিল। তিনিই তাঁহাদিগকে অধিক লাভের প্রলোভন দেখাইয়া, এই হীরা গুলি লইয়া গিয়াছিলেন।

 ফিরিয়া আসিবার পর, মহাজনেরা, হীরা বিক্রয়ের ফলাফল কি হইল, তাহা জানিবার জন্য তাঁহার কাছে যাতায়াত করিতে লাগিল। তিনি পীড়িত ও শয্যাগত, সুতরাং কেহই তাঁহার সাক্ষাৎ পাইল না। এই সঙ্গে মহাজনদের মনেও একটা সন্দেহের ছায়া ফুটিয়া উঠিল।

 জামাল খাঁ রোগ মুক্ত হইবার পর তাহাদের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া, সমস্ত ঘটনা প্রকাশ করিয়া বলিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য যখন মানুষকে আশ্রয় করে, তখন তাঁহার সত্য কথাও মিথ্যা হইয়া দাঁড়ায়। সুতরাং এই কয়জন পাওনাদার মহাজন, তাঁহার একান্ত অন্তরঙ্গ বন্ধু হইলেও, তাঁহার কথায় বিশ্বাস করিল না। বরঞ্চ রাজদ্বারে তাঁহার নামে অভিযোগ আনিবার চেষ্টা করিতে লাগিল। কোন ক্রমেই তিনি তাহাদের শান্ত করিতে পারিলেন না।

 ইমানদার যে, তার পক্ষে ইজ্জত বড় বালাই। যাহারা চিরদিনই এই ইমানদারীর গৌরব রাখিয়া আসিয়াছে, তাহারা ঠিক

৭৪