পাতা:দেববাণী - স্বামী বিবেকানন্দ.pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেববাণী । জননীর মুক্তি প্রতিষ্ঠিত ছিল—তাকে প্ৰকৃতি ৰূী কালীও বলে থাকে। একটী স্ত্রীমুক্তি একটি পুরুষমূৰ্ত্তির উপর দাড়িয়ে আছেন—তাতে এই প্ৰকাশ কচ্ছে যে, মায়াবরণ উন্মোচিত না হলে আমরা জ্ঞানলাভ করতে পারি না । ব্ৰহ্ম স্বয়ং স্ত্রী বা পুরুষ কিছুই নন-তিনি অজ্ঞাত ও অজ্ঞেয় । তিনি যখন আপনাকে অভিব্যক্তি করেন, তখন তিনি আপনাকে মায়ার আবরণে আবৃত করে জগজননীরূপ ধারণ করেন ও স্বষ্টিপ্রপঞ্চের বিস্তার করেন। যে পুরুষমূৰ্ত্তিটা শয়ানভাবে রয়েছেন, তিনি শিব বা ব্ৰহ্ম, তিনি মায়াবৃত হয়ে শব হয়েছেন । অদ্বৈতবাদী বা জ্ঞানী বলেন, “আমি জোর করে মায়া কাটিয়ে ব্ৰহ্মকে প্ৰকাশ করব ।” কিন্তু দ্বেতবাদী বা ভক্ত বলেন, “আমরা সেই জগজ্জননীর কাছে প্রার্থনা করলে তিনি দ্বার ছেড়ে দেবেন, আর তখনই ব্ৰহ্ম প্ৰকাশিত হবেনতারই হাতে চাবি রয়েছে।” প্রতিদিন মা কালীর সেবা পুজা করতে করতে এই তরুণ পুরোহিতের হৃদয়ে ক্রমে ক্ৰমে এমন তীব্র ব্যাকুলত ও ভক্তির উদ্রেক হল যে, তিনি আর নিয়মিত ভাবে মন্দিরের পুজাদি কাৰ্য্য চালাতে পারলেন না । সুতরাং তিনি তা পরিত্যাগ করে, মন্দিরের এলাকার ভিতরেই এক পাশে একটী ক্ষুদ্র জঙ্গল ছিল, সেইখানে গিয়ে দিবারাত্র ধ্যান ধারণা করতে লাগলেন । সেটা ঠিক গঙ্গার উপরেই ছিল ; একদিন গঙ্গার প্ৰবল স্রোতে ঠিক একটা কুটার-নিৰ্ম্মাণোপযোগী সমুদয় জিনিস পত্ৰ তার কাছে ভেসে এল । সেই কুটীরে থেকে তিনি ক্রমাগত প্রার্থনা করতে ও কঁদিতে লাগলেন-নিজের দেহরক্ষার চিন্তা, বা জগজ্জননী । ছাড়া আর কোন বিষয়ের চিন্তা মাত্র, তার রইল না । তাঁর এক আত্মীয় 8°