পাতা:দেবী চৌধুরানী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দি -ৰাশি পরিষ্ণ । ব্ৰজেশ্বর বলিলেন যে, “প্তাহার শ্বশুর টাকা দিতে পারেন নাই।” ইরকল্পভের মাথায় বজ্ৰাঘাত হইল—হরবল্লভ চীৎকার করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “তবে টাকা পাও নাই ?” “আমার শ্বশুর টাকা দিতে পারেন নাই বটে, কিন্তু আর এক স্থানে টাকা পাইয়াছি—” হয়বল্লভ । পেয়েছ ? তা আমায় এতক্ষণ বল নাই ? তুর্গ, বচলেম্‌! - ব্র । টাকাটা যে স্থানে পাইয়াছি, তাহাতে সে গ্রহণ করা উচিত কি না, বলা যায় না। ব্ৰজেশ্বর অধোবদনে মাথা চুলকাইতে চুলকাইতে বলিল, “তার নামটা মনে আস্চে নী— সেই যে মেয়ে ডাকাইত একজন আছে ?” হর ৭ কে, দেবী চৌধুরাণী ? ব্র । সেই । হর। তার কাছে টাকা পাইলে কি প্রকারে ? - ব্ৰজেশ্বরের প্রাচীন নীতিশাস্ত্রে লেখে যে, এখানে বাপের কাছে ভাড়াভঁাড়িতে দোষ নাই। ব্রজ বলিল, “ও টাকাটা একটু সুযোগে পাওয়া গিয়াছে।” হর। বদ লোকের টাকা! লেখাপড়া কি রকম হইয়াছে ? ব্র। একটু সুযোগে পাওয়া গিয়াছে বলিয়া লেখাপড়া করিতে হয় নাই। বাপ আর এ বিষয়ে বেশী খোচাখুচি করিয়া জিজ্ঞাসা না করে, এ অভিপ্রায়ে ত্রজেশ্বর তখনই কথাটা চাপা দিয়া বলিল, “পাপের ধন যে গ্রহণ করে, সেও পাপের ভাগী হয়। তাই ও টাকাটা লওয়া আমার তেমন মত নয়।” হরবল্লভ ক্রুদ্ধ হইয়া বলিল, “টাকা নেব না ত ফাটকে যাব না কি ? টাকা ধার নেব, ভার আবার পাপের টাকা পুণ্যের টাকা কি ? আর জপতপের টাকাই বা কার কাছে পাব ? সে আপত্তি করে কাজ নাই। কিন্তু আসল আপত্তি এই যে, ডাকাইতের টাক, তাতে আবার লেখাপড়া করে নাই—ভয় হয়, পাছে দেরী হ'লে বাড়ী ঘর লুঠপাট করিয়া । লইয়া যায়।” - ব্রজেশ্বর চুপ করিয়া রহিল। হর । তা টাকার মিয়াদ কত দিন ? ত্র । আগামী বৈশাখ মাসের শুক্লা সপ্তমীর চন্দ্রাস্ত পৰ্য্যন্ত । হর। তা সে হোলো ডাকাইত। দেখা দেয় না। কোথা তার দেখা পাওয়া যাবে যে, টাকা পাঠাইয়া দিব ? } {