লাভাংশ দ্বারা জরাজীর্ণ মাতামহ ও মাতামহীর প্রতিপালন করিতেন। যখন তাঁহার বয়ঃক্রম পাঁচ বৎসর মাত্র, তখন যাঁহারা ভিক্ষালব্ধ অন্ন দ্বারা তাঁহাকে এবং তাঁহার কনিষ্ঠ ভ্রাতা ভগ্নীদিগকে পোষণ করিয়াছিলেন, কদাচ তাঁহাদিগকে বিস্মৃত হওয়া উচিত নহে, ইহা তাঁহার অন্তঃকরণে সতত জাগরূক ছিল। এই জন্য নিজে অর্দ্ধাশন করিয়াও, তাহাদিগের জন্য কিছু সঞ্চয় করিয়াছিলেন।
মদনমোহন দত্ত তাঁহার এই রূপ চরিত্র দর্শনে অত্যন্ত সন্তুষ্ট হইলেন এবং তাঁহার বুদ্ধি ও শ্রমশক্তির যথেষ্ট প্রশংসা করিয়া তাঁহাকে সিপ্সরকারের কর্ম্মে নিযুক্ত করিলেন। ইহা বিলসাধার কর্ম্মাপেক্ষা উৎকৃষ্ট; ইহার মাসিক বেতন দশ টাকা। কিন্তু এই কর্ম্মে যেমন মধ্যে মধ্যে পরিতোষিকের প্রত্যাশা ছিল; তেমনি জাহাজের নাবিক ও কাপ্তেন্দিগের নিকট হইতে প্রহারের সম্ভাবনাও বড় অল্প ছিল না। নিরন্তর এই রূপ কষ্টসহিষ্ণুতায় তাঁহার প্রতিভার ঔজ্জ্বল্য, বৃদ্ধি হইয়াছিল। তাঁহার কৃচ্ছ্রসহিষ্ণুতা, সাহস, সুক্ষদর্শন, এবং প্রস্তুতবুদ্ধি, তাঁহাকে এক অদ্বিতীয় সিপ্সরকার করিয়াছিল। সিপ্সরকারদিগকে সর্ব্বদাই জাহাজের কর্ম্মচারিগণের সহিত ভয়ানকরূপে বিবাদ করিতে হইত। রামদুলাল যদিও ইংরাজী ভাষায় লিখিতে শিখেন নাই, কিন্তু