পাতা:ধর্ম্মজীবন (দ্বিতীয় খন্ড) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

籃 yr o ধৰ্ম্মজীবন । ভারাক্রান্ত হৃদয়ের পক্ষে ঘোর নৈরাশ্যজনক। ঈশ্বর বাহিরে!-- বল কি ? তবে কি আমাদের প্রাণের ধৰ্ম্ম-সংগ্রামের সাক্ষী কেহ নাই ? ঈশ্বর বাহিরে !-তবে কি আমাদের আত্মার ঘোর নির্জনতার সঙ্গী কেহ নাই ? কে না। সময়ে সময়ে আত্মার এই নিৰ্জনতা অনুভব করিয়াছেন ? যখন আমাদের আতু জীবনের ভার বহিয়া শ্রান্ত ও গলদঘৰ্ম্ম হয় এবং অন্ধকার জীবন-পথে একাকী দাড়াইয়া নিরাশায় ডুবিতে থাকে, তখন আমাদিগকে উৎসাহ-বাণী শুনাইবার কেহ নাই ? একি ভয়ঙ্কর কথা ! ঈশ্বর বাহিরে -তবে কি আমাদের প্ৰাণের গভীর সুখ ও গভীর দুঃখ জানিবার কেহ নাই ? আমরা স্বীয় স্বায় প্রকৃতিকে পরীক্ষা করিলে দেখিতে পাইব যে, আমরা বাহিরে সে সুখ বা যে দুঃখ প্ৰকাশ করি, তাহ সামান্ম, তাহা অগভীর, ও অনেক সময় ক্ষণিক উত্তেজনা-সস্তুত ; গভীর সুখ ও গভীর দুঃখ সৰ্ব্বদা অব্যক্তই থাকিয়া যায়। এ বিষয়ে নদী-স্রোতের সহিত মানব হৃদয়ের তুলনা হইতে পারে। নদীর স্রোতে যেমন দেখিতে পাই, জলরাশির উপর দিয়া এক প্রকার স্রোত চলে সে স্রোত বায়ুর দ্বারা আন্দোলিত, সেখানে তরঙ্গ উঠে, তাহ নৌবাহী জনের অরিত্রাঘাতে কম্পিত, কিন্তু গভীর অন্তস্তলে আর এক প্রকার স্ৰোত নিঃশব্দসঞ্চারে প্রবাহিত থাকে, তাহ বায়ুর আঘাতে আন্দোলিত হয় না, তাহাতে জরঙ্গ উঠে না, বা বাহিরের কোনও উপদ্রবে: চৰ্প’ল হয় না। মানব-হৃদয়ে যেন তেমনি দুইটী স্রোত আছে ।