পাতা:ধর্ম্মজীবন (প্রথম খণ্ড) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

DC e ধৰ্ম্মজীবন। যাইতেছে। দুইজনেই একাকী চলিয়াছে ; কিন্তু একজন সত্য সত্যই একাকী, সঙ্গে কেহ নাই ; অপর ব্যক্তির পশ্চাতে কিছু দূরে দশজন বন্ধু কথোপকথন করিতে করিতে আসিতেছে। মনে কর একদল দাসু্য উভয় ব্যক্তিকেই আক্রমণ করিতে আসিল । দস্ত্ৰাদিগকে দেখিয়াই প্রথমোক্ত ব্যক্তি ডাকিতে লাগিলেন ;-“ও রাম, ও হরি, ও গোবিন্দ, তোমরা পিছাইয়া পড়িলে কেন ?” অথচ রাম, হরি বা গোবিন্দ কোথাও নাই । দ্বিতীয় ব্যক্তিকে ও যখন দস্তু্যগণ আক্রমণ করিবার উপক্রম করিল, তখন তিনিও ডাকিতে লাগিলেন, “নরেন ! নরেন ! তোমরা শীঘ্ৰ এস।” দুইজনেরই ডাক একপ্রকার, কিন্তু এই উভয় আহবানের মধ্যে কত প্ৰভেদ তাহা একবার চিন্তা কর । যখন দলু্যদল ভয় প্ৰদৰ্শন করিয়া বিরত না হইয়া সত্য সত্যই উভয়কে আক্রমণ করিল, তখন উভয়ের প্রভেদ লক্ষ্য করিতে পারা গেল। তখন প্রথমোক্ত ব্যক্তি প্ৰাণভয়ে কঁাপিতে লাগিল ; কিন্তু দ্বিতীয় ব্যক্তি সিংহের ন্যায়। গজ্জন করিয়া বলিয়া উঠিল— “খবৰ্দার ! আমার শরীরে হাত দি ও না, তাহা হইলে নিস্তার থাকিবে না ।” উভয়ের এই বলের তারতম্যের কারণ কি ? দ্বিতীয় ব্যক্তি জানে, যদিও সে একাকী দণ্ডায়মান তাহার পশ্চাতে আর একটা শক্তি রহিয়াছে, যাহা তাহার রক্ষা-বিধানে সমর্থ। এইরূপ মানুষ যখন ধৰ্ম্মনিয়মে ও সত্যের শক্তিতে প্ৰকৃত আস্থা স্থাপন করে, তখন তাহারও চিত্তে ঐ প্রকার বলের আবির্ভাব হইয়া থাকে। যতক্ষণ আমাদের ঈশ্বরবিশ্বাস এইরূপ সত্য বিশ্বাসে পরিণত না হয়, যতৃক্ষণ না তাহ।