ৰাবিংশতিতম অধ্যায়-আত্মপ্রতি। S$4 গুরু। তাহা বুঝে নাই। কিন্তু জাতীয় ধর্শ্বে জাতীয় চরিত্র গঠিত। যে জাতীয় ধৰ্ম্ম বুঝে না সেও জাতীয় ধর্মের অধীন হয়, জাতীয় ধর্শ্বে তাহার চরিত্র শাসিত হয়। ধর্মের গৃঢ় মৰ্ম্ম অল্প লোকেই বুঝিয়া থাকে। যে কয়জন বুঝে তাহাদেরই অনুকরণে ও শাসনে জাতীয় চরিত্র শাসিত ও গঠিত হয়। এই অনুশীলন ধৰ্ম্ম যাহা তোমাকে বুঝাইতেছি, তাহ যে সাধারণ হিন্দুর সহজে বোধগম্য হইবে, তাহার বেশী ভরসা আমি এখন রাখি না। কিন্তু এমন ভরসা রাখি যে মনস্বীগণ কর্তৃক ইহা গৃহীত হইলে, ইহার দ্বারা জাতীয় চরিত্র গঠিত হইতে পারিবে। জাতীয় ধর্মের মুখ্যফল অল্প লোকেই প্রাপ্ত হয়, কিন্তু গৌণফল সকলেই পাইতে পারে। শিষ্য। তার পর অার একটা কথা আছে। আপনি যে প্রীতির পারমার্থিক অনুশীলনপদ্ধতি বুঝাইলেন তাহার ফল, লোক-বাৎসল্যে দেশ-বাৎসল্য ভাসিয়া যায়। কিন্তু দেশ-বাৎসল্যের অভাবে ভারতবর্ষ সাত শত বৎসর পরাধীন হইয়া অবনতি প্রাপ্ত হইয়াছে। এই পারমার্থিক প্রীতির সঙ্গে জাতীয় উন্নতির কিরূপে সামঞ্জস্য হইতে পারে ? গুরু। সেই নিষ্কাম কৰ্ম্মযোগের দ্বারাই হইবে । যাহা অমুষ্ঠেয় কৰ্ম্ম, তাহ নিষ্কাম হইয়া করিবে। যে কৰ্ম্ম ঈশ্বরামুমোদিত তাহাই অনুষ্ঠেয়। আত্মরক্ষা, দেশরক্ষা, পরপীড়িতের রক্ষা, অমুন্নতের উন্নতিসাধন—সকলই ঈশ্বরগুমোদিত কৰ্ম্ম, সুতরাং অমৃষ্ঠেয়। অতএব নিষ্কাম হইয়া আত্মরক্ষা, দেশরক্ষা, পীড়িত দেশীয়বর্গের রক্ষা, দেশীয় লোকের উন্নতি সাধন করিবে । শিষ্য। নিষ্কাম আত্মরক্ষা কি রকম ? আত্মরক্ষাই ত সকাম । গুরু। সে কথার উত্তর কাল দিব । দ্বাবিংশতিতম অধ্যায়।—আত্মপ্রীতি। শিষ্য। আপনাকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম, নিষ্কাম আত্মরক্ষা কি রকম ? আপনি বলিয়াছিলেন, “কাল উত্তর দিব।” সেই উত্তর এক্ষণে শুনিব ইচ্ছা করি। গুরু। আমার এই ভক্তিবাদ সমর্থনার্থ কোন জড়বাদীর সহায়তা গ্রহণ করিব, তুমি এমুন প্রত্যাশ কর না। তথাপি হৰ্ট স্পেন্সরের একট কৰা তোমাকে পড়াইয়া শুনাইব ।
পাতা:ধর্ম্মতত্ত্ব-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২৫
অবয়ব