পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৪
ধুস্তুরী মায়া

 নিমেষের মধ্যে মেনীর রূপান্তর হল। একটি সুশ্রী যুবতী আবির্ভূত হয়ে বললে, মা, আমি খোকার ভার নিচ্ছি। কিন্তু আমারও তো বাচ্চা আছে, তাদের দশা কি হবে? আগেকার গুলোর জন্যে ভাবি না, তারা বড় হয়েছে, গেরস্ত বাড়িতে এঁটো খেয়ে, চুরি করে, ছুঁচো ইঁদুর উচ্চিংড়ে ধরে যেমন করে হক পেট ভরাতে পারবে। কিন্তু চারটে দুগ্ধপোষ্য বাচ্চা আছে যে, এখনও চোখ ফোটেনি, তাদের উপায় কি হবে?

 —তুই মাঝে মাঝে বেরাল হয়ে তাদের খাওয়াবি।

 —কিন্তু বাড়ির কর্তা কি ভাববে? গোসাঁই যদি দেখে ফেলে তবে মহা গণ্ডগোল হবে যে!

 —তোর কোনও ভয় নেই। যদি দেখেই ফেলে তবে গোসাঁইও বেরাল হয়ে যাবে।

 —আবার তো মানুষ হবে?

 —না না, চিরকালের মতন বেরাল হয়ে যাবে, কোনও ফেসাদ বাধাতে পারবে না। তোকেও বেশী দিন আটকে থাকতে হবে না, এই ছেলের একটা সুরাহা হয়ে গেলেই তুই ছাড়া পাবি।

 দেবী অন্তর্হিত হলেন। সুকুমারীর খোকা জেগে উঠে কাঁদতে লাগল, মেনী তাকে বুকে তুলে নিলে। বুভুক্ষু খোকা প্রচুর স্তন্য পেয়ে আনন্দে কাকলি করে উঠল।


কটা ভাড়াটে ঘোড়ার গাড়ি বাড়ির সামনে এসে দাঁড়াল। গোকুলবাবু ফিরে এসেছেন, পরশু তাঁকে কাজে যোগ দিতে হবে। তিনি হাঁকডাক আরম্ভ করলেন—গুপে কোথায় গেলি রে, জিনিস গুলো নামিয়ে নে না—ঝি এর মধ্যেই চলে গেছে নাকি?