গোকুলবাবুর অশান্তি বাড়তে লাগল। মেনকা রোজ রাত্রে লুকিয়ে লুকিয়ে কোথায় যায়? রবিবারেও দুপুরে দু-তিন ঘণ্টা তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না, হয়তো রোজই বেরিয়ে যায়। গোকুলবাবু স্ত্রৈণ হয়ে পড়েছেন, তৃতীয় পক্ষের রূপসী স্ত্রীকে চটাতে চান না। তবু একদিন বলে ফেললেন, হ্যাঁগা, তুমি মাঝে মাঝে কোথায় উধাও হও?
মেনকা বললে, সে খোঁজে তোমার দরকার কি, আমি তো জেলখানার কয়েদী নই। তুমি রোজ সন্ধ্যেবেলা কোথায় আড্ডা দিতে যাও আমি কি তা জানতে চাই?
গোকুলবাবু স্থির করলেন, চুপ করে থাকা উচিত নয়, জানতে হবে কার কাছে যায়। তিনি একটা টর্চ কিনে শোবার ঘরে এমন জায়গায় রাখলেন যাতে মেনকা টের না পায় অথচ তিনি চট করে সেটা হাতে নিতে পারেন। রাত্রে তিনি ঘুমের ভান করে শুয়ে রইলেন। মেনকা দুপুরে রাতে বিছানা থেকে উঠে নিঃশব্দে বাইরে গেল, গোকুলবাবুও খালি পায়ে তার পিছু নিলেন।
উঠন পার হয়ে খিড়কির দরজা খুলে মেনকা বাড়ির পিছন দিকের একটা ছোট চালা ঘরে ঢুকল। সেখানে কাঠ কয়লা আর ঘুঁটে থাকে। মেনকার পরনে সাদা শাড়ি, সেজন্য অন্ধকারেও তাকে অস্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল, কিন্তু চালা ঘরের ভেতরে গিয়ে সে হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে গেল। টর্চের আলো ফেলে গোকুলবাবু দেখলেন, মেনকা নেই, একটা সাদা বেরাল শুয়ে আছে, চারটে বাচ্চা তার দুধ খাচ্ছে।
চার দিকে আলো ঘুরিয়ে গোকুলবাবু ডাকলেন, মেনকা!
মেনী বললে, কেন? চেঁচিও না, আমার বাচ্চারা ভয় পাবে।