পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৮
ধুস্তুরী মায়া

 মেনকার রূপান্তর দেখে গোকুলবাবুর মাথার মধ্যে সব গুলিয়ে গেল, হাত থেকে টর্চ খসে পড়ল। কিন্তু অন্ধকারেও তাঁর দৃষ্টিশক্তি বিশেষ কমল না, তিনি আশ্চর্যও হলেন না, শুধু মর্মাহত হয়ে বললেন, রাধামাধব, ব্রাহ্মণের বাড়িতে জারজ সন্তান!

 মেনী বললে, আহা কি আমার ব্রাহণে রে! নিজের মুখটা না হয় দেখতে পাচ্ছ না, পিছনে হাত দিয়ে দেখ না একবার।

 গোকুলবাবু পিছনে হাত দিয়ে দেখলেন তাঁর একটি প্রমাণ সাইজ ল্যাজ বেরিয়েছে। তাতেও তিনি আশ্চর্য হলেন না, অত্যন্ত রেগে গিয়ে বললেন, কুলটা মাগী, কতগুলো নাগর আছে তোর?

 —অত আমার হিসেব নেই।

 —এক্ষুনি আমার বাড়ি থেকে দূর হয়ে যা।

 —তুমি আমাকে তাড়াবার কে হে গোসাঁই? জান না, আমাদের হল মাতৃতন্ত্র সমাজ, যাকে বলে ম্যাট্রিআর্কি। আমাদের সংসারে মদ্দাদের সর্দারি চলে না, তারা একবারে উটকো, শুধু ক্ষণেকের সাথী।

 গোকুলবাবু প্রচণ্ড গর্জন করে মেনীকে কামড়াতে গেলেন। মেনী এক লাফে সরে গিয়ে চেঁচিয়ে ডাকল—উর্‌র‍্যাঁও। (মার্জার-ভাষাবিৎ শ্রীদীপংকর বসু মহাশয় বলেন, এই রকম শব্দ করে মার্জার-জননী তার দূরস্থ সন্তানদের আহ্বান করে।)

 মেনীর রুচির বৈচিত্র্য আছে, সে হরেক রকম পতির ঔরসে হরেক রকম অপত্য লাভ করেছে। তার ডাক শুনে নিমেষের মধ্যে সাদা কালো পাঁশুটে পাটকিলে ডোরা-কাটা প্রভৃতি নানা রঙের বেরাল ছুটে এসে বললে, কি হয়েছে মা? মেনী বললে, এই বজ্জাত হুলোটাকে দূর করে দে।