পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই বুড়োর রূপকথা
১১

আসব, গড়গড়া আর তামাকের সরঞ্জামও সব নিয়ে আসব। হাঁ, ভাল কথা—আমার আর একটু জানবার আছে। হ্যাঁগা পদীরানী, শ‍ুক্ত, মোচার ঘণ্ট, ছোলার ডালের ধোঁকা—এসব রাঁধতে জান?

 স্পন্দচ্ছন্দা ঠোঁট বেকিয়ে বললেন, ওসব আমি খাই না।

 —আমি খেতে ভালবাসি। আচ্ছা, মাগ‍ুর মাছের কালিয়া, ইলিশের পাতুড়ি, ভাপা দই—এসব করতে জান?

 —ও তো বাবুর্চীর কাজ।

 —তবে কি ছাই জান! এসব রান্না বাবুর্চীর কাজ নয়, গিন্নীরই করা উচিত। তোমার নাচ দেখে তো আমার পেট ভরবে না।

 —ও, আপনি রাঁধুনী গিন্নী চান! একটা কেষ্টদাসী কি কালিদাসী ঘরে আনলেই পারতেন।

 হঠাৎ রেগে গিয়ে উদ্ধব বললেন, কি বললে! কালিদাসীর সামনে তুমি দাঁড়াতে পার নাকি?

 —অত রাগ কেন মশাই, তিনি বঝি আপনার আগেকার গিন্নী?

 উদ্ভব গর্জন করে বললেন, আগেকার কি, দস্ত‍ুর মত জলজ্যান্ত এখনকার! তার কাছে তুমি? তরমুজের কাছে তেলাকুচো, কামধেনর কাছে মেনী বেরাল!

 স্পন্দচ্ছন্দা চিৎকার করে বললেন, অ্যাঁ, এক স্ত্রী থাকতে আবার বিয়ে করতে এসেছ? ঠক জোচ্চোর, বেরিয়ে যাও, বেরিয়ে যাও!

 মকর রায় বললেন, যাবে কোথায়! রীতিমত ক্রিমিনাল কাণ্ড, ধাপ্পা দিয়ে রাজকন্যা আর রাজ্য আদায় করতে এসেছে। থাম, মজা টের পাইয়ে দেব।

 উদ্ধব দাঁত খিচিয়ে কিল দেখিয়ে গট গট করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন।