পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
ধুস্তুরী মায়া

মস্ত শানে জগবন্ধু বললেন, ব্যাপারটা ভাল হল না। ওরা অমনি ছাড়বে না, তোমাকে জব্দ করবার চেষ্টা করবে।

উদ্ধব বললেন, গিন্নীর নামটা শুনে হঠাৎ কেমন মন খারাপ হয়ে গেল, সামলাতে পারলাম না। তা যাক গে, কি আর করবে।

 দু দিন পরে সলিসিটার গ‍ুঁই অ্যাণ্ড হ‍ুঁই-এর চিঠি এল। রাজকুমারী শ্রীযুক্তেশ্বরী স্পন্দচ্ছন্দা চৌধুরানীকে যে মানসিক আঘাত দেওয়া হয়েছে এবং তজ্জনিত তাঁর যে স্বাস্থ্যহানি ঘটেছে তার খেসারত স্বর‍ূপ এক লক্ষ টাকা তিন দিনের মধ্যে পাঠানো চাই, অন্যথায় উমেশ পালের বিরুদ্ধে মকদ্দমা ‍র‍ুজু করা হবে।

 জগবন্ধু বললেন, মশকিলে ফেললে দেখছি। মকদ্দমার ফল যাই হক, হয়রানি আর কেলেঙ্কারি হবে। ভাবিয়ে তুললে হে!

 উদ্ধব বললেন, ভাবনা কিসের। মোক্ষম উপায় আমাদের হাতে রয়েছে। ব্যাঙ্গমার কথা মনে নেই?

 জগবন্ধু সোৎসাহে বললেন, রাজী আছ তুমি?

 —খূব রাজী। শখ মিটে গেছে, হোটেলের জঘন্য রান্না আর খেতে পারি না। দেখ তো পূর্ণিমা কবে।

 পাঁজি দেখে জগবন্ধু বললেন, আজই তো!


ন্ধ্যার সময় দুজনে দক্ষিণেশ্বরের ঘাটে এলেন এবং তিনটি বেলপাতা চিবিয়ে মন্ত্র পাঠ করলেন—বম মহাদেব সকল বস্ত‍ু আগের মতন আবার অস্ত‍ু। বলেই একটি ডুব দিলেন।

 ঘাটে উঠে মাথা মুছতে মুছতে উদ্ধব বললেন, ওহে জগু, আবার দিব্যি একমাথা টাক হয়েছে, শরীরটাও আড়াইমনী হয়ে গেছে। তোমার কেমন হল?