পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

রামধনের বৈরাগ্য

সাহিত্যগগনে উড়ন-তুবড়ির মতন রামধন দাসের উত্থান যেমন আশ্চর্য তাঁর হঠাৎ অন্তর্ধানও সেই রকম। কিন্তু এখন তাঁর নাম কেউ করে না, কারণ বাঙালী পাঠক অতি নিমকহারাম। তারা জয়ঢাক পিটিয়ে থাকে মাথায় তুলে নাচে, চোখের আড়াল হলেই কিছু দিনের মধ্যে তাকে ভুলে যায়। রামধনেরও সেই দশা হয়েছে। এককালে তিনি অদ্বিতীয় কথাসাহিত্যিক বলে গণ্য হতেন, তাঁর খ্যাতির সীমা ছিল না, রোজগারও প্রচুর করতেন। তার পর হঠাৎ একদিন নিরুদ্দেশ হলেন। তাঁর ভক্তপাঠকরা এবং সপক্ষ বিপক্ষ লেখকরা অনুসন্ধানের ত্রুটি করেন নি, কিন্তু ঠিক খবর কিছুই পাওয়া গেল না। কেউ বলে নোবেল প্রাইজের তদবির করবার জন্য তিনি বিলাতে আছেন, কেউ বলে সাহিত্যিক গ‍ুণ্ডারা তাঁকে গ‍ুমখুন করেছে, কেউ বলে সোভিয়েট সরকার তাঁকে মোটা মাইনে দিয়ে রাশিয়ায় নিয়ে গেছে, তিনি কমিউনিস্ট শাস্ত্রের বাংলা অনুবাদ করছেন।

 আসল কথা, রামধন দাস তাঁর নাম আর বেশ বদলে ফেলে বিষ্ণুপ্রয়াগে আছেন এবং গ‍ুর‍ুর উপদেশে সস্ত্রীক যোগ সাধনা করছেন। কেন তিনি সাহিত্যচর্চা আর বিপুল প্রতিপত্তি ত্যাগ করে আশ্রমবাসী তপস্বী হলেন তার রহস্য তাঁর মুখ থেকে কেবল একজন শ‍ুনেছেন—তাঁর গ‍ুর‍ুদেবের প্রধান শিষ্য ও আশ্রম-সেক্রেটারি নিবিড়ানন্দ। এই নিবিড় মহারাজের পেটে কথা থাকে না। এঁর মুখ থেকে লোকপরম্পরায় যে খবর এখানে এসে পৌঁছেছে তাই