পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
ধুস্তুরী মায়া

 —দু দিন পরে পরীক্ষা তা মনে নেই? তুমি অঙ্কে বেজায় কাঁচা। যাও, বাড়ি গিয়ে গসাগু, লসাগু কষ গে, এখানে ইয়ারকি দিতে হবে না।

 গাবলু সকলের দিকে একবার কটমট করে তাকিয়ে চলে গেল।

 রম্ভা তার তিন প্রণয়ীকে বললে, এখন এখানে কোনও বাজে লোক নেই, আমার মনের কথা খোলসা করে বলছি শোন। তোমাদের তিন জনের সঙ্গেই আমি প্রেমে পড়েছি, তিন জনই আমার বাঞ্ছিত বল্লভ, কান্ত দয়িত, দিলরুবা ডারলিং।

 বিদ্যাপতি হতভম্ব হয়ে বললে, তুমি পাগল হয়েছ নাকি? বিয়ে তো একজনের সঙ্গেই হতে পারে।

 বিক্রম সিং বললে, মরদের অনেক জোর‍ু, হতে পারে, কিন্তু ঔরতের এক শৌহর। এই হল আইন। তুমি আমাদের মধ্যে একজনকে বেছে নাও, নয় তো ভারী গড়বড় হবে।

 শ্যামসুন্দর বললে, রম্ভা, তুমি এ কি বলছ? ছি ছি, হে জগন্নাথ দীনবন্ধু!

 রম্ভা উত্তর দিলে, আমি সত্য বলেছি, আমার কথার নড়চড় হবে না। শোন বিদ্যাপতি, তুমি আমার দেশের লোক, বিদ্যার জাহাজ, তোমাকে আমার চাইই। আর বিক্রম সিং, রাজপুত জাতটির ওপর আমার ছেলেবেলা থেকেই একটা টান আছে। তোমার মতন নওজওআন বীরকে আমি কিছুতেই ছাড়তে পারি না। আর শ্যামসুন্দর, তুমি ললাটেন্দুকেশরীর বংশধর, তোমরা চিরকাল সৌন্দর্যের উপাসক, তুমি নিজেও পরম সুন্দর। তোমাকে না হলে আমার চলবে না।

 শ্যামসুন্দর বললে, তবে আর এদিক ওদিক করছ কেন রম্ভা? তুমি রাধা আমি শ্যাম, আমাকে বিয়া কর।