পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভরতের ঝুমঝমি
৪৫

খুব হালকা করে দিলুম। কিন্তু সখীটা অতি কুটিলা, শকুন্তলার মা মেনকার কাছে গিয়ে আমার নামে লাগাল।

 এই ঘটনার পর প্রায় দশ মাস কেটে গেল। তখন আমি শিষ্যদের সঙ্গে গঙ্গোত্তরীর নিকট বাস করছি। একদিন প্রাতঃকালে ভাগীরথীতীরে বসে আছি এমন সময় একজন শিষ্য এসে জানালে, একটি অপূর্বরূপবতী নারী আমার সঙ্গে দেখা করতে চাচ্ছেন। বিরক্ত হয়ে বললাম, আঃ জালাতন করলে, এখানেও রূপবতী নারী! নির্জনে একটু পরমার্থচিন্তা করব তারও ব্যাঘাত। কে এসেছে পাঠিয়ে দাও এখানে।

 দেখেই চিনলুম মেনকা অপ্সরা। ভব্যতার জ্ঞান নেই, দাঁতন চিবুতে চিবুতে এসেছে, বোধ হয় ভেবেছে তাতে খুব চমৎকার দেখাচ্ছে। খেঁকিয়ে উঠে বললুম, কিজন্য আসা হয়েছে এখানে? জান, আমি মহাতেজস্বী দুর্বাসা মনি, বিশ্বামিত্রের মতন হ্যাংলা পাও নি যে লাস্য হাস্য ছলা কলা হাব ভাব ঠসক ঠমক দেখিয়ে আমাকে ভোলাবে।

 মেনকা ভেংচি কেটে বললে, আ মরি মরি! জগতে তো আর কেউ নেই যে তোমাকে ভোলাতে আসব! তোমার ভালর জন্যই দেখা করতে এসেছি। তা যদি না চাও তো চললুম, কিন্তু এর পরে বিপদে পড়লে দোষ দিতে পাবে না। এই বলে মেনকা এক পায়ের গোড়ালিতে ভর দিয়ে বোঁ করে ঘুরে গেল।

 মাগীর আস্পর্ধা কম নয়, আমাকে তুমি বলছে। শাপ দিতে যাচ্ছিলুম—তুই এক্ষুনি শ‍ুঁয়োপোকা হয়ে যা। কিন্তু ভাবলুম, উঁহ‍ু, ব্যাপারটা আগে জানা দরকার। বললুম, কিজন্য এসেছ বলই না ছাই।

 মেনকা বললে, মহাদেব যে তোমার ওপর রেগে আগুন হয়েছেন,