পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
8৬
ধুস্তুরী মায়া

শকুন্তলাকে তুমি বিনা দোষে শাপ দিয়েছিলে শ‍ুনে। আর একটু হলেই তোমাকে ভস্ম করে ফেলতেন, নেহাত আমি পায়ে ধরে বোঝালুম তাই এবারকার মতন তুমি বেঁচে গেছ।

 আমি দেবতা মানষে কাকেও গ্রাহ্য করি না, কিন্তু মহাদেবকে ডরাই। জিজ্ঞাসা করলুম, কি বললে তুমি তাঁকে?

 —বললুম, আহা নির্বোধ ব্রাহ্মণ, মাথার দোষও আছে, না বুঝে রাগের মাথায় শাপ দিয়ে ফেলেছে। তা শকুন্তলা তো বেশী দিন কষ্ট পাবে না, আপনি দুর্বাসা মুনিকে এবারটি ক্ষমা করুন। মহাদেব আমাকে স্নেহ করেন, তাঁর শাশ‍ুড়ীর নাম আর আমার নাম একই কি না। বললেন, বেশ, ক্ষমা করব, কিন্তু আগে তুমি তাকে দিয়ে একটা প্রায়শ্চিত্ত করাও।

 —কি প্রায়শ্চিত্ত করাবে শুনি?

 —তোমার ভয় নেই ঠাকুর, খুব সোজা প্রায়শ্চিত্ত। শকুন্তলা এখন হেমকূট পর্বতে প্রজাপতি কশ্যপের আশ্রমে আছে। আমি খবর পেয়েছি সম্প্রতি তার একটি খোকা হয়েছে। কশ্যপ বলেছেন, এই ছেলে ভরত নামে প্রসিদ্ধ হবে এবং পৃথিবী শাসন করবে। মনে করেছিলুম গিয়ে একবার দেখে আসব, কিন্তু তা আর হল না। ইন্দ্র সব অপ্সরাদের ডেকে পাঠিয়েছেন। তাঁর ব্যাটা জয়ন্ত বিগড়ে যাচ্ছে—হবে না কেন, বাপের ধাত পেয়েছে—তাই তাড়াতাড়ি তার বিয়ে দিচ্ছেন। দু মাস ধরে অষ্ট প্রহর নৃত্য গীত পান ভোজন চলবে। আজই আমাকে যেতে হবে। দেবতাদের ষাট দিনে মানুষের ষাট বৎসর। আমি যখন ফিরে আসব তখন শকুন্তলার ছেলে বুড়ো হয়ে যাবে। তাই তোমাকেই তার কাছে পাঠাতে চাই।

 আমি ভাবলুম, এ তো কিছু, শক্ত কাজ নয়। আমি যদি শকুন্তলার কাছে গিয়ে তাকে আর তার ছেলেকে আশীর্বাদ করে