পাতা:নকল রাণী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারোগার দপ্তর, ১৫৮ সংখ্যা।

অনেক দিনের পর খাওয়াইবে। সরেজবাবু অনিচ্ছাসত্বে আহার করিলেন। কমলা কারণ জিজ্ঞাসা করিলে কহিলেন,—“সমস্ত দিনের পর আহারে তত ইচ্ছা নাই, তাই খাইতে পারিলাম না।”

 আহারাদির পর সরোজকান্ত কমলার ঘরে শয়ন করিলেন, কমলা গুড়‍্গুড়িতে তামাক সাজিয়া দিয়া গেল। বৃদ্ধ পিতার জলযোগের ব্যবস্থা করিয়া দিয়া স্বয়ং খাইতে বসিল। সমস্ত দিন না খাওয়া, না দাওয়া—সরোজ ভাবিতে ভাবিতে ঘুমাইয়া পড়িলেন। রজনী প্রভাত, কমলা উঠিল, উঠিয়া দেখে, ঘরে সরোজবাবু নাই—দরজা খোলা।

 “এই ঘটনার কিছুদিন পরে একজন পুলিস-কর্ম্মচারী আসিয়া সরোজবাবুর ধোঁজ করে, তখন বৃদ্ধ আর ইহজগতে নাই। কমলা একাকী, পুলিস-কর্ম্মচারীকে দেখিয়া কমলার মনে ভয় হইয়াছিল। কমলা বিবেচনা করিল, এস্থানে একাকী থাকা আর ভাল নয়, পিতাঠাকুর মন্দলোক ছিলেন, ইহারা কোনরূপে তাহার সুলুকসন্ধান পাইয়া এবং আমাকে তাঁহার উত্তরাধিকারিণী জানিয়া, পাছে আমার উপর জুলুম করে, এই ভাবিয়া কমলা পরদিন গ্রাম ত্যাগ করিয়া কাশীতে আসিল। কিন্তু সেই পুলিস-কর্ম্মচারীকে তাহার অনুসন্ধান করতে ইহার পর আর কেহ দেখিল না। কমলা এখন কাশীতেই বাস করিতেছে। এখন আমরা লোক পরম্পরায় অবগত হইতে পারিয়াছি যে, কমলা তাহায় পিতার সাহায্যে, ধনলোভে পতি-হত্যা করিয়াছে ও সেই ধন লইয়া এখন কাশীতে রাণীনামে পরিচয় প্রদান করিয়া আপনার কলঙ্ক বিমোচনের চেষ্টা করিতেছে। তাহার পিতা এখন ইহ-জগত পরিত্যাগ করিয়া চলিয়া গিয়াছে। কমলকে ধৃত করিয়া তাহাকে একটু পীড়াপীড়ি