পাতা:নন্দনে নরক - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় পরিচ্ছেদ যুবতী-মৰ্কট সংবাদ হীরাজি প্রেমজির নিকট বিদায় লইয়া ঘুরিতে ঘুরিতে চোর-গলির মোড়ে আসিয়া দাড়াইল । অদূরে একটি আলোক স্তম্ভের কাছে দাড়াইয়া একটি অল্প বয়স্ক যুবক, কিঞ্চিৎ ভিক্ষালাভের আশায় করুণকণ্ঠে সুর করিয়া বলিতেছিল, “কিছু ভিক্ষা দাও বাবা, কলে হাতকাটা গিয়াছে, ঘরে বুড়ো মা, হাতকাটা হতভাগাকে কিছু ভিক্ষা দাও ; দুটা প্রাণ বাচাও।”—তাহার বা হাতখানি কোটের আস্তিন ভেদ করিয়া বাহির হইয়াছিল, কিন্তু দক্ষিণ আস্তিনটি শূন্ত গর্ভ, কাধের নীচে তাহা ঝুলিতেছিল। হীরাজি তাহার সম্মুখে আসিয়া গৰ্জ্জন করিয়া বলিল, “ওরে ভিখা, তুই বেট এখানে রোজগার আরম্ভ করিয়া দিয়াছিস্ ? হাতকাট সিপাই হইয়াছিস্ ? হতভাগা ভূত !”—হীরাজি তাহার আস্তিনের অন্তরালস্থিত দক্ষিণ হস্তখানি দৃঢ় মুষ্টিতে ধরিয়া সবলে আকর্ষণ করিল, তাহার পর জিজ্ঞাসা করিল, “যে কাজের ভার লইয়া এখানে আসিয়াছিলি, তাহার কি হইল ?” ভিখা বলিল, “হাত ছাড় ; তুমি যে আমার হাতখান গুড়া করিয়া দিলে ! বুড়ে বয়সেই এই, জোয়ান কালে তুমি বোধ হয় পাহাড় গুড়া করিতে পারিতে।--সব বলিব ও দিকে চল ; কিন্তু তুমি এমন ভাবে আর আমার উপার্জনে বাধা দিওনা । আধ ঘণ্টার মধ্যে আমি চারগণ্ড৷ পয়সা উপার্জন করিয়াছি, আর গণ্ডাদুই পয়সা হইলেই রাত্রির খোরাকটার জন্য ভাবিতাম না।”