জাপানের সাহিত্য ও সংবাদপত্র।
জাপানের সাহিত্যভাণ্ডার পৃথিবীর অন্যান্য সভ্যজাতির সাহিত্যের ন্যায় ঐশ্বর্য্য সম্পদে পরিপুষ্ট নহে। জাপানী সাহিত্যে কালিদাস বা সেক্সপিয়ার দূরের কথা, মিল্টন বা মধুসূদনের ন্যায় কবির পরিচয় পাওয়া যায় না। ঐতিহাসিকেরা অনুমান করেন যে, প্রাচীন জাপান যুদ্ধবিগ্রহ ও ব্যবসাবাণিজ্যে ব্যাপৃত থাকায় সাহিত্য সম্বন্ধে কোনরূপ চিন্তা করিবার অবসর পায় নাই।
“কোজিকী” জাপানের সর্ব্বাপেক্ষা প্রাচীন গ্রন্থ। ইহা ভারতীয় পৌরাণিক গ্রন্থাবলীর ন্যায় বিবিধ অতিপ্রকৃত উপাখ্যানে পরিপূর্ণ। কোজিকীর কোন কোন আখ্যায়িকার সহিত অস্মদ দেশীয় পুরাণ বিশেষের ঐক্যতা পরিলক্ষিত হয়। ইহা গদ্যে রচিত।
জাপানীদিগের প্রধান নীতিশাস্ত্রের নাম ‘বুসিডাে’। হিন্দুর নিকটে বেদ, মুসলমান সমীপে কোরান ও খ্রীষ্টানের কাছে বাইবেল যদ্রুপ, প্রাচীন ‘বুসিডাে’ জাপানিগণের নিকটে তদ্রুপ। জাপানীরা এই গ্রন্থকে ভগবান ভাস্করের মুখ-নিঃসৃত বলিয়া বিশ্বাস করিয়া থাকে। ইহাতে পরমাত্মা, জীবাত্মা, পুনজন্ম, পরজন্ম, পাপপুণ্য, স্বাস্থ্য, পীড়া, রাজভক্তি, পিতৃমাতৃভক্তি, স্বদেশপ্রীতি প্রভৃতি বহু বিষয় ধারাবাহিকরূপে লিখিত আছে।
অতি পূর্ব্বকালে “বুসি” অর্থাৎ সম্ভ্রান্ত ক্ষত্রিয় জাতি ভিন্ন অন্য কেহ এই গ্রন্থ পাঠ করিতে অধিকারী ছিল না। এক্ষণে—জাপানের উন্নতির যুগে—ইহা সাধারণসম্পত্তিরূপে পরিগণিত হইয়াছে।