পাতা:নব্য রাসায়নী বিদ্যা ও তাহার উৎপত্তি - প্রফুল্লচন্দ্র রায়.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নব্য ৰসায়নী বিদ্যা অনুমান ১৭৬৪ খ্ৰীষ্টাব্দে চৌত্রিশ বৎসর বয়সে প্রীষ্টলি রসায়ন জগতে যে যুগান্তর উপস্থিত করেন, তাহা সম্যক রূপে হৃদয়ঙ্গম করিতে গেলে সে সময়ে দহনপ্রক্রিয়া সম্বন্ধে জন সাধারণের কিরূপ ধারণা ছিল তাহা অগ্রে জানা আবশ্যক। “শুষ্ক কাষ্ঠ অগ্নি সংযােগে প্রজ্জ্বলিত হয়, কিন্তু প্রন্তর প্রজ্জ্বলিত হয় না কেন?” প্রাচীন পণ্ডিতগণ এ বিষয়ে অনেক আলােচনা করিয়াছিলেন। ষ্টাল প্রমুখ পণ্ডিতগণ বলিতেন যে কাষ্ঠে এক প্রকার সুক্ষ্ম পদার্থ অলক্ষিতভাবে আছে, এ নিমিত্তই কাষ্ঠ দহন- শীল। অঙ্গার, গন্ধক, তৈলাদি দাহ্ন বস্তুতেও এই সূক্ষ্ম পদাৰ্থ বৰ্ত্তমান আছে এবং ইহার ভৌতিক (material) অস্তিত্বে তাহারা বিশ্বাস করিতেন। এই সূক্ষ্ম পদার্থকেই তাহার ফুজিষ্টন(pblogiston) নামে অভিহিত করিয়াছিলেন। তঁাহাদের মতে দাহ্যবস্তু মাত্রই যৌগিক পদার্থ এবং ফুজিষ্টন প্রত্যেকেরই অন্যতম উপাদান। বস্তু সমূহে পরস্পর যে পার্থক্যের উপলব্ধি হয় তাহা কেবল ফ্লজিষ্টনের পরিমাণের তারতম্য বশতঃ এবং অন্যতর উপাদানের ধর্মভেদে ঘটিয়া থাকে। দহনকালে যে বস্তু দগ্ধ হইতেছে, তাহার ফ্লভিন বহির্গত হইয়া যায় এবং এই নিমিত্তই উত্তাপ, আলাে ও অগ্নিশিখা পরিলক্ষিত হয়। এই ক্লজিষ্টনই সর্বপ্রকার রাসায়নিক পরিবর্তনের মূলে বর্তমান। একটা উদাহরণ লওয়া যাক। যথাঃ-দস্তা উত্তাপ প্রয়ােগে প্রজ্জ্বলিত হইয়া এক প্রকার খেত ভশে পরিণত হয়। যেমন কাঠ দগ্ধ হইয়া গেলে দগ্নাবশেষ থাকে সেইরূপ ধাতুও অগ্নিদগ্ধ - ইলে “খাতুতন্ম” অবশিষ্ট থাকে । এই খাতুভন্ম অত্যন্ত নায়ুর্বেদে ব্যবহৃত “মারিত” বা “পুটিত” লৌহ এত লঘু যে ফুৎকার প্রয়ােগে উড়িয়া যায়। এমন কি জলের উপর নিক্ষেপ কৰিলে লঘু।