পাতা:নব্য রাসায়নী বিদ্যা ও তাহার উৎপত্তি - প্রফুল্লচন্দ্র রায়.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৫৯
নব্য রাসায়নী বিদ্যা ও তাহার উৎপত্তি
৫৯

ও তাহার উৎপত্তি। পরী- তােপধ্বনি—আর এই দুই বায়ুর পরস্পর রাসায়নিক সংযােগে জল প্রস্তুত হয়। ইহাতে প্রতিপন্ন হইল যে, জল ভৌতিক ইলেও মৌলিক পদার্থ নহে। এই দুই প্রকার বা ততোধিক মৌলিক পদার্থ সংযােগে যৌগিক । compound ) পদার্থ করণকে Synthesis ( সংশষণ) কহে। কাবেণ্ডিসের ক্ষার প্রায় ১৫ বৎসর পরে (১৮০০ খৃঃ অঃ) কালাইল এবং নিকলসন্ নামক দুই বৈজ্ঞানিক জলের ভিতর তাড়িতপ্রবাহ চালাইয়া জলকে অনুজান ও উদজান নামক বায়ুতে পৃথক করিয়া ফেলিলেন। ইহাকে বিশ্লেষণ (analysis) কহে। ১৮০৭ খৃঃ অঃ ডেবী এই প্রকারে তীব্র” বা “তীক্ষ যবক্ষার ও সর্জিকাক্ষারের ভিতর এই তাড়িত- প্রবাহ চালাইয়া দেখাইলেন যে, ইহাদের প্রত্যেকে মৌলিক পদার্থ ন হইয়া অম্লজান, উদজান ও দুই নবধাতুর সংযোগে গঠিত। এই দুই ধাতু রৌপ্যের ন্যায় সাদা ও চকচকে-নাম পােটাসিয়ম্ ও সােডিয়ম্। ডেবী যখন প্রথমে এই দুই ধাতু পৃথক্ কহিলেন, তখন তিনি এই অদ্ভুত আবিষ্কারে “মাতােয়ারা হইয়া র্ষে গৃহের মধ্যে ইতস্ততঃ নৃত্য করিতে লাগিলেন। অনেকক্ষণ পরে প্রকৃতি হইয়ষ্ট ভাবে আবার গবেষণাকাৰ্যে প্রবৃত্ত হইলেন। রসায়নশাস্ত্রে নবযুগের আবিভাব হইল। ডেবী কর্তৃক পােটাসিয়ম্ ও সােডিঃ আবিষ্কারের পর আরও অনেক ভৌতিক পদার্থ আবিষ্কৃত হইতে লাগিল। আজ কাল প্রায় (৭) সত্তটী ভৌতিক পদার্থ জানা গিয়াছে। ডেবীর যশঃসৌরভ দিগদিগন্তে বিকীর্ণ হইয়া পড়িল। দরিদ্রসন্তান ডেবীর মাথা ঘুরিয়া গেল। ধনী ও বিলাসী সমাজে তাহার আদর আমন্ত্রণাদির বিষয় পূর্বেই উল্লিখিত হইয়াছিল, তদ্বিষয়ে সন্দেহ নাই। জ্ঞানান্বেষীর পক্ষে আর্যঋষিগণের আদর্শই অনুকরণীয়। চালচলন সাদাসিদে, তপস্বীর মত হইবে, এবং মন উচ্চ চিন্তায় ব্যাপৃত থাকিবে, ইহাই আমাদের আদর্শ হওয়া উচিত।