পাতা:নয়া বাঙ্গলার গোড়া পত্তন (প্রথম ভাগ).pdf/৩৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাড়তির পথে বাঙ্গালী Տ Գծ বেদনার কথা সকলের আগে তাহাদিগকে জানিতে ও বুঝিতে হইবে, কি ভাবে “উৎপীড়িতের আর্তনাদ” বন্ধ হয় তাহার উপায় উদ্ভাবন করিতে হইবে । জমাজমীর দখলী স্বত্ব, খাজনার আইনকানুন, উত্তরাধিকার, জমাজমীর ভাগ বাটোয়ার, হস্তান্তর ক্ষমতা, প্রজার দায়গ্ৰস্ততা, মহাজনের ঋণজাল, টাকা কর্জের ব্যবস্থা, ক্রয়-বিক্রয়ের লোকসান প্রভৃতি যে সকল বিষয়ে বাঙ্গলাব চাষীরা সজ্ঞানে অজ্ঞানে দারুণ অসুবিধ ভোগ করিতেছে, তাহার প্রতীকার করা চাই । ইহা না করিতে পারিলে কৃষকদের সঙ্গে দেশের নেতাদের প্রকৃত কুস্তি কয়েম হইতে পারে না । কৃষকদের মত শ্রমজীবী বা কুলী মজুর প্রভৃতি শ্রেণীর উপর যে অত্যাচার অবিচার হইয়া থাকে তাহাও দূর করা আবশুক । কারখানায় শ্রমজীবীদের কাজের ঘণ্টা কম হওয়া আবশ্যক । তাহাদের বাসস্থান আরামদায়ক ও স্বাস্থ্যপ্রদ কারয়া তোলা দরকার । সামান্ত বেতনের মজুরও যাহাতে সামাজিক বীমার সুবিধা ভোগ করিতে পারে, তাহার ব্যবস্থা করা উচিত স্বরাজের আধ্যাত্মিক অর্থ ও দেশের মুক্তি সম্বন্ধে কৃষক ও শ্রমিকগণ নেহাৎ অজ্ঞ ও নিশ্চেষ্ট নহে ; কিন্তু তাহারা সৰ্ব্বাগ্রে নিজেদের খাওয়পরা চায়—পেটের ধান্ধাই তাহাদের সব চাইতে বড় ধান্ধ । রাষ্ট্রনীতি-ক্ষেত্রে হামেশাই ভাগ-বাটোয়ারা, চুক্তি, “রফা”-নিষ্পত্তির দরকার আছে । সকল কৰ্ম্মকেন্দ্রেই বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নরনারীর জন্য যাহাতে সংখ্যামুপাতিক বখরা নির্দিষ্ট থাকে তাহার দিকে নজর রাখা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এই সকল অনুপাত ও হিস্তা নির্ণয় করিবার বেলায় সাম্প্রদায়িক প্রতিদ্বন্দ্বিতা অবশুম্ভাবী। ভারতীয় জীবনের কোন স্তর হইতেই এই অর্থ-নৈতিক সমস্তাটা বাদ দিলে চলিবে না। এটাকে কানার মতন এড়াইয়া গেলে বর্তমান যুগধৰ্ম্ম সম্বন্ধে অজ্ঞতারই পরিচয় দেওয়া হইবে ।