বলিতেছি—এই জন্য এবারও তোমাকে বলি নাই। আমাদের মতে তুমি বাড়ী আসিলেই ভাল হয়।”
যথাকালে প্রভাত এই পত্র পাইল। কিন্তু স্বাধীন ভাবে, জীবিকা-অর্জ্জনের কথা পড়িয়া ও ইংরাজী সমাজে তাহার গৌরবের বিবরণ দেখিয়া সে স্বাধীনভাবে জীবিকা–অর্জ্জনেই বদ্ধপরিকর হইয়াছিল; আগ্রহাতিশয়ে ভুলিয়া গিয়াছিল, গৃহে যাহা কিছু তাহারই, এবং তাহার রক্ষণ তাহার প্রথম ও প্রধান কর্ত্তব্য।
নবীনচন্দ্র জ্যেষ্ঠকে বুঝাইলেন,— প্রথম ঝোঁক কিছু প্রবলই হয় কিছু দিন পরেই চাকরীর নেশা ছুটিয়া যাইবে।
নবীনচন্দ্র বুঝাইলেন বটে, কিন্তু বিষয়বুদ্ধিসম্পন্ন শিবচন্দ্র তাহাই বুঝিলেন কি না সন্দেহ।
প্রভাতের এ কার্য্যগ্রহণ বিষয়ে তাহার ও কৃষ্ণনাথের সম্মতি ছিল; আর কাহারও তাহা অভিপ্রেত ছিল না।
চপলা শুনিয়া বলিল, “শুধু শুধু চাকরী করাই বা কেন?” গৃহিণী শুনিয়া কর্ত্তাকে বলিলেন, “লোকে কি ভাল বলিবে?”
শুনিয়া কৃষ্ণনাথ কিছু বিরক্ত হইলেন। সকলেই তাঁহার মতের বিরোধী! তিনি বলিলেন, “তোমরা সব ঐ রূপ বুঝ। শ্যামাপ্রসন্ন বলে, ‘এক শত, দেড় শত টাকা বেতন পায়, এমন ছেলে ত কলিকাতাতেও অনেক জুটিল: তাহার জন্য পল্লীগ্রামে যাইবার আবশ্যক ছিল না।’ এখনকার দিনে এক শত দেড় শত টাকা বেতন কি সহজ কথা? হাকিম বৎসরে কয়টা হয়?
১২৭