বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ ।

হইলেই বা কি বেতন? মরিবার সময় পাঁচ শত। উকীল এখন কুড়ি টাকায় চারি গণ্ডা। আমি বসাইয়া দিয়া যাইতে পারিলে তাহার অধিক উপার্জ্জন করিতে পারিবে। তোমার ছেলেদের একটারও ত সে ক্ষমতা হইল না! কেবল খরচ করিতে পারেন। প্রভাত ত ভাল ছেলে।” গৃহিণী নলিনবিহারীর অসুস্থতার ওজর করিলেন। কৃষ্ণনাথ বলিলেন, “আর দুই জন? আমি মুখে রক্ত তুলিয়া যাহা করিলাম, তাহা রাখিয়া খাইবার ক্ষমতা হইলেই বাঁচি।”

 গৃহিণী পুনরায় বলিলেন, “বাপকে জিজ্ঞাসা করিয়াছে ত? পরের ছেলে;—তাহারা কি বলে—” কৃষ্ণনাথ বাধা দিয়া বলিলেন, “বলাবলি আর কি? তাঁহাদের ক্ষমতা হয়, ভাল কায করিয়া দিবেন। কর্ম্ম কায পথে পড়িয়া আছে কি না; কুড়াইয়া লইলেই হইল! চাকরী তত সুলভ নহে।”

 কৃষ্ণনাথ কিছু উত্তেজিত হইয়াই কথাগুলা বলিয়াছিলেন। নহিলে সচরাচর তিনি এমন কথা বলেন না। উত্তেজনা-হেতু কণ্ঠস্বরও কিছু উচ্চ হইয়াছিল। শোভা পার্শ্বের কক্ষে ছিল। সে সব শুনিতে পাইল।

 পিতার সেই কথা শোভার কর্ণে ধ্বনিত হইতে লাগিল,— “শ্যামাপ্রসন্নও বলে, ‘এক শত, দেড় শত টাকা বেতন পায়, এমন ছেলে ত কলিকাতাতেও অনেক জুটিত; তাহার জন্য পল্লীগ্রামে যাইবার আবশ্যক ছিল না’।” চপলাও শুনিয়া বলিয়াছে,— “শুধু শুধু চাকরী করাই বা কেন?”

১২৮