পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ।

না। নিষ্কলঙ্কচরিত্র স্বামীর অনাবিল প্রেমে ও শাশুড়ীর অসাধারণ স্নেহসম্পদে সে সম্পদশালিনী ছিল। সকলের মুখেই সে স্বামীর প্রশংসা শুনিত। তাহার মত সুখ কয় জনের?

 সতীশচন্দ্র শ্বশুরালয়ে বিজয়ার প্রণাম করিতে আসিয়াছিল; সেই দিনই ফিরিতে চাহিল। কিন্তু তাহা হইয়া উঠিল না; তাহাকে চারি দিন থাকিয়া যাইতে হইল।

 এ দিকে প্রভাতের পূজার ছুটী ফুরাইয়া আসিল। সে কলিকাতায় প্রত্যাবর্ত্তনের আয়োজন করিতে লাগিল। দুই বৎসর হইতে পিসীমা তাহার বিবাহের জন্য ব্যস্ত হইয়া উঠিয়াছেন। তিনি নিতান্ত জিদ করিলে নবীনচন্দ্র বুঝান, এখন ছেলেরা অধিক বয়সে বিবাহ করিতে চাহে; প্রভাত না হয় দু’দিন পরেই বিবাহ করিবে। এবার পিসীমা নিতান্ত ব্যগ্রতা প্রকাশ করিতে লাগিলেন; প্রভাতকে বলিলেন, “এবার আমি কিছুতেই শুনিব না। মাঘ মাসে তোর বিবাহ দিব।” নবীনচন্দ্র বলিলেন, “দিদি, ওর যদি এখন ইচ্ছা—” পিসীমা বাধা দিয়া বলিলেন, “ওর আবার ইচ্ছা কি? বাপ মা মত করিয়া বিবাহ দিবে, তাহাতে ছেলের আবার মত কি? তোদের কি সবই নূতন? তোর বিবাহের সময় তোর মত কে জিজ্ঞাসা করিয়াছিল? তুই চুপ কর। আমি কোনও কথা শুনিব না। মাঘ মাসে উহার বিবাহ দিতেই হইবে।”

২৯