পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ।

বয়সে বড়, তিনি সহসা সম্মুখে চাহিয়া ব্যস্ত হইয়া বলিলেন, “সর! সর! ছেলেরা দেখিতেছে। কি লজ্জা!” সকলে ব্যস্ত হইয়া সরিয়া আসিলেন। সরিতে সরিতে মধ্যমা বলিলেন, “দিদি, ঠাকুরঝির বর।” শুনিয়া বালিকা তাঁহাকে কিল দেখাইল। তিনি হাসিয়া বলিলেন,— “তা' আমি কি করিব? বরকে বারণ কর, যেন আর বারান্দায় না আসেন।” বালিকা রাগের ভাণ করিয়া চলিয়া গেল, কিন্তু তাহার নয়নে ও আননে যে হাসির আভাষ ফুটিয়া উঠিতেছিল সে তাহা গোপন করিতে পারিল না।

 রাজপথের অপর পারে ছাত্রাবাসের বারান্দায় দাঁড়াইয়া চারি পাঁচ জন যুবক সন্ন্যাসী-সরকার-সংবাদে নিবিষ্টচিত্ত ছিল। তাহাদের মধ্যে যাহাকে যুবতী ননন্দার “বর” বলিয়া নির্দ্দেশ করিয়াছিলেন, সে আমাদের পরিচিত— ধুলগ্রামের দত্ত-পরিবারের সর্ব্বস্ব প্রভাতচন্দ্র।

 যে বৃহৎ সুরম্য হর্ম্মের সিংহদ্বারে সন্ন্যাসী বসিয়াছিল, সে গৃহের অধিকারী কৃষ্ণনাথ বসু কোনও বড় ‘হৌসে’র মুৎসুদ্দি। তাঁহার পিতা গবর্মেণ্টের রসদ বিভাগে কাজ করিয়া যথেষ্ট অর্থ উপার্জ্জন করিয়াছিলেন। সে অর্থ সদুপায়ে কি অসদুপায়ে অর্জ্জিত, তাহা আমি বলিতে পারি না। কৃষ্ণনাথ তাঁহার একমাত্র পুত্র। তিনি অল্প বয়সেই ‘হৌসে’ কর্মরত হয়েন। তখন মেরজাই লোপ পাইতেছে; ধূতির উপর চাপকান চড়াইয়া, তাহার উপর রজ্জুর মত পাকান উত্তরীয়

৩১