পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ।

ফেলিয়া, মস্তকে হাত-বাধা পাগড়ী পরিয়া বাঙ্গালী ‘হৌসে’ কাষ করিতেছে।

 কৃষ্ণনাথ পৈত্রিক অর্থ বহুপরিমাণে বর্দ্ধিত করিয়াছেন। কেহ বলে তাঁহার দশ লক্ষ, কেহ বলে বিশ লক্ষ টাকা আছে। তাঁহার অট্টালিকা রম্য, অশ্বগুলি তেজে ভরা, দাসদাসী অনেক। তাঁহার তিন পুত্ত্র, এক কন্যা। মধ্যম পুত্ত্র বিনোদবিহারী প্রভাতচন্দ্রের সতীর্থ ছিল। একবার এফ. এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইতে না পারিয়া সে বিদ্যালয় ত্যাগ করে। প্রভাতচন্দ্র যে ছাত্রাবাসে বাস করে, তাহা বিনোদবিহারীর গৃহের সম্মুখে; সেই জন্যই তাহার সহিত বিনোদবিহারীর বিদ্যালয়ে আরব্ধ পরিচয় লুপ্ত হয় নাই। বিনোদবিহারী সময় সময় প্রভাতের নিকট আসিত; প্রভাতও বিনোদবিহারীর গৃহে যাইত। প্রভাত যে দরিদ্রসন্তান নহে, তাহা তাহার বেশভূষায় বিনোদবিহারীর বাড়ীর সকলে বুঝিয়াছিলেন। সন্ধান লইয়াও তাঁহারা সে বিষয় অবগত হইয়াছিলেন।

 কৃষ্ণনাথের একমাত্র কন্যা শোভাময়ী একাদশবর্ষ অতিক্রম করিয়া দ্বাদশে পদার্পণ করিয়াছিল; ক্রমে দ্বাদশও অতিক্রম করিতেছিল। তাহার বিবাহের জন্য ঘটক ঘটকী হাঁটাহাঁটি করিতেছিল। কথায় বলে, লক্ষ কথা না হইলে বিবাহ হয় না; কিন্তু লক্ষ লক্ষ কথা শেষ হইয়া গেল, তথাপি কোথাও সম্বন্ধ স্থির হইল না। এক দিন এক জন ঘটকী গৃহিণীর নিকট একটি পাত্রের সন্ধান দিয়া কেবল উঠিতেছে, এমন সময় এক

৩২