বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিদ্যার্জ্জনে কঠিন প্ৰয়াস
৫৫

ভর্ত্তি হইল। আমার মনে হইতে লাগিল—আমাকে ভর্ত্তি করিলে ইহাদের কাহারও অপেক্ষা আমি নিন্দনীয় ফল দেখাইব না।

 কয়েক ঘণ্টা পর শিক্ষয়িত্রী আমার উপর সদয় হইলেন। তিনি বলিলেন, “ওখানে ঝাঁটা আছে, ওটা লইয়া পার্শ্বের ঘরটা ঝাড় দাও ত।”

 আমি বুঝিলাম—ইহাই আমার পরীক্ষা। রাফ্‌নার-পত্নীর গৃহে আমি যে শিক্ষা পাইয়াছি এইবার তাহার যাচাই হইতেছে। ভাল কথা—আমি মহা আনন্দে ঘর পরিষ্কার করিতে গেলাম।

 ঘরটা একবার দুইবার তিনবার ঝাড়িলাম। একটা ন্যাকড়ার ঝাড়ন ছিল—তাহা হইতে ধূলিরাশি বাহির করিয়া ফেলিলাম। দেওয়ালের আশে পাশে অলি গলিতে যেখানে যে টুকু ময়লা জমিয়াছিল সমস্তই পরিষ্কার করিলাম। বেঞ্চ, টেবিল, চেয়ার, ডেস্ক ইত্যাদি কাঠের সমস্ত আস্‌বাবই ঝাড়িয়া চক্‌চকে করিয়া রাখিলাম। শিক্ষয়িত্রীকে জানাইলাম ঝাড়া হইয়াছে। তিনিও ‘ইয়াঙ্কি’রমণী। তিনি খুঁটিনাটি সর্ব্বত্রই তন্ন তন্ন করিয়া দেখিলেন। টেবিলের উপর আঙ্গুল দিয়া বুঝিলেন ময়লা কিছুই নাই। নিজের রুমাল বাহির করিয়া পরীক্ষা করিলেন—চেয়ারের কোণ হইতেও কিছু ধূলা বাহির হয় কি না। পরে আমার দিকে তাকাইয়া বলিলেন, “দেখিতেছি, ছোকরা বেশ কাজের।” আমি ‘পাশ’ হইলাম।

 বোধ হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করিবার সময়েও কোন বালককে এত কঠিন পরীক্ষা দিতে হয় না। হার্ভার্ড ও ইয়েল