পাতা:নির্জ্জন গৃহকোণে.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নি জর্জ ন গৃহ কোণে মন্থর জনপ্রবাহের আকর্ষণ বড় কম নয়, কালের বিস্তীর্ণ পটভূমিকার যেন চলমান দীর্ঘ কাহিনী, আদি নেই—অস্ত নেই—অতল পারাবার। তবু স্বমিত্র মাঝে মাঝে ভাবে যদি কেউ তিন নম্বরে আসে—এবার যারা আসবে তারা হয়ত বেশীদিন থাকতেও পারে । মাঝে যারা এসেছিল তারা ভাড়াটে বটে, ও দিনগুলি কি ভাবেই না কেটেছে, কৰ্ত্তার আস্ফালন, গিল্পীর একঘেয়ে ঘ্যানঘ্যাননি, ছোট ছেলেদের উৎপাত, তদুপরি একটা গ্রামোফোন, একই রেকর্ডের অবিরাম পুনরাবৃত্তি, জ্যোৎস্না পুলকিত রাত্রে বেজে উঠল...'এমন দিনে তারে বলা যায়’, দারুণ শীতের দিনে বাজলো “প্রখর তপন তাপে”, অসহ্য । সঙ্গীত যে কতখানি কদৰ্য্য হতে পারে তা সেই ক’দিনেই সুমিত্ৰা বুঝেছিল, এর চেয়ে যেন নিঃসঙ্গ জীবন ছিল ঈশ্বরের প্রসন্ন আশীৰ্ব্বাদ । ঘড়িতে সাড়ে চারটে বাজতে চল্লো—সুমিত্রা জড়তার ঘোর কাটিয়ে উঠে দাড়ালো, মধ্যাহ্নের অবসাদক্লিষ্ট মুখে স্বাভাবিক প্রসন্নতা ফিরিয়ে আনবার চেষ্টা করলো। নিরঞ্জনের কাপড়-চোপড়গুলি গুছিয়ে হাতের কাছে সাজিয়ে রাখল—ঘড়ির কাটা পাচটার গায়ে সরে এসেছে, চায়ের সরঞ্জাম ঠিক করে ষ্টেভটি ধরিয়ে স্বমিত্রা উন্মুখ হয়ে রাস্তার ধারের জানালাটীতে এসে দাড়ালো । চায়ের জল ফুটে গেল, কিন্তু নিরঞ্জনের দেখা নেই, টিপটে জল ঢেলে সুমিত্র উৎকণ্ঠিত হয়ে আবার জানালার ধারে এলো, যথাসময়ে নিরঞ্জন ট্রাম থেকে নামলে । স্থমিত্রার বুক থেকে যেন একটা ভারী বোঝ+ নেমে গেল, এ সহরে বিপদের অভাব নেই, দুর্ঘটনা একটা ঘটতে কতক্ষণ। হাসিভরা মুখে নিরঞ্জনের হাত থেকে এ্যাটাসে কেসটী নিয়ে সুমিত্রা যথাস্থানে রেখে দিল । \ગર