পাতা:নির্জ্জন গৃহকোণে.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নি জঁ ন গৃ ই কোণে ছোট একরকম পোকা গাছগুলিতে ছড়িয়ে আছে, সহজে যে ফুল ফুটবে এমন ভরসা নেই, সুমিত্রার মুখখানি সহসা স্নান হয়ে গেল । গাছের পরিচর্য্যা শেষ হোল—এখন নিশ্চিন্দ্র মোলায়েম একটানা সুদীর্ঘ অবসর । তারপর অনেক পরে দুপুরের সোনালি রোদ গিয়ে পড়ল পার্কের একমাত্র তাল গাছটির মাথায় । ফিরিওয়ালার কলরবে আবার বড় রাস্ত মুখর হয়ে উঠল, ট্রামবাস মোটরের আওয়াজে মুছাহত সহরের যেন পুনর্জন্ম হোল, দ্বিপ্রহরের অলঙ্ঘনীয় অলসতার আকর্ষণের হাত থেকে এতক্ষণে তার মুক্তি হোল । সহরের সঙ্গে সুমিত্রারও আবার যেন পুনর্জন্ম হোল, নিরঞ্জনের ফেরার সময় ক্রমশঃই এগিয়ে আসছে। মধ্যাহ্নের এই ক্লাস্তিকর নিঃসঙ্গ অবসর সুমিত্রার জীবনের প্রধানতম তিরস্কার। এই বাড়ীটিতে তিনটা ফ্ল্যাটু, নীচে একটি, ওপরে দুটি, নীচেরটি বাড়ীওয়ালার জন্য বারোমাস রিজার্ত, তিনি থাকেন বৰ্দ্ধমানে, কদাচিৎ অৰ্দ্ধোদয় কিংবা চূড়ামণি যোগে তার বাড়ীর মেয়ের কলকাতায় এলে এখানে থাকেন, নইলে কৰ্ত্তা একাই মাঝে মাঝে দু একদিন থেকে যান ; নীচেরতলা বারোমাস খালিই থাকে, ওপরের ফ্ল্যাট দুটির একটিতে সুমিত্রারা থাকে, অপরটিতে যদি ওদেরই মতো কেউ এসে থাকে তবু মুমিত্রার নিঃসঙ্গত দূর হয়, কিন্তু আশ্চৰ্য্য এই তিন নম্বরের ফ্ল্যাটুটি, এতদিন হয়ে গেল এ পর্য্যন্ত একঘর স্থায়ী পরিবার এলে! না, অনেক কষ্টে যদিই বা কেউ এলো বড় জোর একমাস কি দেড় মাস থেকেই তারা চলে যায় । তাই বিরক্ত হয়ে সুমিত্রা নবাগতদের সঙ্গে আলাপ করা ছেড়েই দিয়েছে, কি হবে দুদিনের আলাপে, যেন ট্রেনের আলাপ, যতক্ষণ গাড়ীতে ততক্ষণ এক মন এক প্রাণ...তারপর... একান্ত দুঃসহ হলে সুমিত্রা রাস্তার দিকে জানালাটিতে দাড়ায়, নীচের \ー)〉