পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ ya শুধু মনে আছে যে রাস্তায় একজন আসামী ভদ্রলোকের বাড়ী অতিথি হইয়া দিন দুই বেশ চব্যচোষ্য আহার করিয়াছিলাম। বহুদূর হাঁটিয়া ত বিন্ধ্য পর্বতের কাছে উপস্থিত হইলাম ; পর্বতটা কিন্তু আমাদের ভাল লাগিল না । কেমন নেড়া। নেড়া মনে হইতে লাগিল। শৃঙ্গসম্বলিত । হিমালয়ের কেমন একটা প্ৰাণকাড়া সৌন্দৰ্য্য আছে ; বিন্ধ্যাচলের তাহার নামগন্ধ নাই । তিন চার দিন চড়াই উৎরাই এর পর যখন অমরকন্টকে পৌছিলাম, তখন দেখিলাম উহা আশ্রমের উপযুক্ত স্থান একেবারেই নয়। চারিদিকে শুধু বন-জঙ্গল আর মাঝখানে একটা ভাঙ্গা ধৰ্ম্মশালায় জনকয়েক রামায়াৎ সাধু বসিয়া গাঁজা খাইতেছে। যেখানে পাহাড় হইতে বুদবুদ। করিয়া নৰ্ম্মাদার ধারা বাহির হইতেছে সেখানে নিৰ্ম্মদা দেবীর একটিী ছােট মন্দির আছে; তাহাও সংস্কারাভাবে নিতান্তই জীর্ণ। অমরকন্টক এককালে যে বৌদ্ধদিগের তীর্থ ছিল তাহার নিদর্শন এখনও সেখানে বৰ্ত্তমান । ব্ৰহ্মদেশীর পাগোদার মত অনেকগুলি পুরাতন কাঠের মন্দির সেখানে রহিয়াছে। কোন কোনটীর মধ্যে বুদ্ধমূৰ্ত্তি এখনও প্রতিষ্ঠিত, কোথাও বা অন্য সম্প্রদায়ের সাধুরা বুদ্ধমূৰ্ত্তি সরাইয়া দিয়া রাম বা কৃষ্ণ মূৰ্ত্তি স্থাপিত করিয়াছেন। চারিদিকে শালবন, সেখানে বাঘের দৌরাত্ম্যও যথেষ্ট । আশপাশের গ্ৰাম হইতে গরু ছাগল প্ৰায়ই বাঘে লইয়া যায়। যখন দুই চারজন মানুষকে লইয়া বাঘে টানাটানি করে তখন রেওয়া রাজ্যের সিপাহীরা এক শ’ বৎসর আগেকার মুঙ্গেরী বন্দুক লইয়া গোটা দুই ফাঁকা আওয়াজ করিয়া কৰ্ত্তব্য পালন করে। সাধারণ লোকেদেরও বাঘের হাতে মরা সহিয়া গিয়াছে। জঙ্গলে ঢুকিবার আগে তাহারা বাঘের দেবতার পূজা দেয়, তাহার পরেও যদি বাঘে ধরে, ত সেটাকে পূৰ্ব্বজন্মের কৰ্ম্মফলের উপর বরাত দিয়া নিশ্চিন্ত হয়। সাধুদেরও সেই অবস্থা ; তবে তাহারা নিৰ্ম্মদ পরিক্রম করিতে বাহির R