পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8& নির্বাসিতের আত্মকথা না ! তাহদের বঁাচাইবার জন্যই উল্লাস পুলিসের নিকট সব কথা স্বীকার করিল। উল্লাসের বিশ্বাস ছিল যে সত্য কথা জানিতে পারিলেই পুলীসের কৰ্ত্তারা নগেন ও ধরণীর উপর আর মোকদ্দমা চালাইবে না। পুলীস যে ঠিক ধৰ্ম্মপুত্র যুধিষ্ঠিরের বংশ-সংস্কৃত নয় এ কথাটা তখন তি আমাদের মাথায় ভাল করিয়া ঢুকে নাই। : ক্রমে পুলিস নানা জেলা হইতে অনেকগুলি ছেলে আনিয়া হাজির ক্ষরিল । শ্ৰীহট্ট হইতে সুশীল সেন ও তাহার দুই ভাই েৈরন ও হেমচন্দ্র আসিল। সুশীলকে আমরা পূৰ্ব্বে চিনিতাম কিন্তু তাহার দুই ভাইকে ইহার পূৰ্ব্বে কখনও দেখি নাই। মালদহ হইতে কৃষ্ণজীবন, যশোদ্ভুত্ব হইতে বীরেন ঘোষ ও খুলনা হইতে সুধীরও আসিয়া পৌছিল। আর আসিয়া পৌঁছিলেন আমার পুরাতন বন্ধু পণ্ডিত হৃষীকেশ । হৃষীকেশ আমার ডফ কলেজের সহপাঠী। কলেজ হইতে মা ইংরাজী সরস্বতীকে বয়কট করিয়া আমি যখন সাধুগিরি করিতে বাহির হই, তখন পণ্ডিত হৃষীকেশ ভাবাধিক্য বশতঃ নিমতলার ঘাটের গঙ্গাজল স্পর্শ করিয়া প্ৰতিজ্ঞা করিয়াছিল যে সমস্ত সৎকৰ্ম্মে সে আমার সহগামী হইবে। একে নিমতলার ঘাট-মহাতীৰ্থ বলিলেই হয় ; তাহার উপর মা গঙ্গাএকেবারে জাগ্ৰত দেবতা। সেখানকার প্ৰতিজ্ঞা কি আর বিফল হুইবার জো আছে ? মা গঙ্গা কি কুক্ষণেই তাহার প্রতিজ্ঞা শুনিয়া মনে মনে ‘তথাস্তু’ বলিয়াছিলেন জানি না, কিন্তু সেইদিন হইতে আজ অবধি পণ্ডিত হৃষীকেশ আমার পিছনেই লাগিয়া আছে। শাস্ত্রে বলে যে উৎসবে, ব্যসনে, দুর্ভিক্ষে, রাষ্ট্রবিপ্লবে, রাজদ্বারে ও শ্মশানে, যে একসঙ্গে গিয়া দাঁড়ায়, সেই বান্ধব । হৃষীকেশের বিবাহে ও তাহার পুত্রের অন্নপ্রাশনে আমি লুচি খাইয়া আসিয়াছি, দুর্ভিক্ষের সময় দুজনে পীড়িতের সেবা করিয়াছি; এক সঙ্গে উভয়ে সাধুগিরি করিয়া ফিরিয়াছি, মাষ্টারও