পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ե՜Տ . নির্বাসিতের আত্মকথা সুতরাং ভারতবর্ষের লোকের মত একেবারে:শিষ্ট শান্ত হইয়া যায় নাই। হিন্দুস্থান ব্যতীত অন্য দেশের উচ্চশ্রেণীর লোকের সংখ্যা খুব কম। শিক্ষা-প্রচারের আধিক্য বশতই হােক বা প্রকৃতির নিরীহত্য বশতঃই হোক মাদ্রাজী ব্ৰাহ্মণ একেবারে নাই বলিলেই চলে। আমরা যে সময় উপস্থিত হইলাম তখন জেলখানার মধ্যে পাঠানের প্রাধান্য খুব বেশী। সব জাতিকে একত্র রাখার ফলে যে দুৰ্বল জাতিদের উপর অযথা অত্যাচার যথেষ্ট হয় তাহ বলাই বাহুল্য। দিন কত থাকিতে থাকিতেই দেখিলাম যে জেলখানায় দুৰ্ব্বলের পক্ষে সুবিচার পাইবার কোনই সম্ভাবনা নাই। কৰ্ম্মচারীদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-সাবুদ দিবার বুকের পাটা কয়েদীদের মধ্যে বড় একটা দেখা যায়। না । পরের জন্য নিজের ঘাড়ে বিপদ কে টানিয়া আনিতে যাইবে ? যে যার নিজের নিজের প্রাণ বঁাচাইতেই ব্যস্ত। যাহারা খোসামোদ করিতে সিদ্ধহস্ত, মিথ্যা কথা যাহারা জলের মত বলিয়া যাইতে পারে তাহারাই কর্তৃপক্ষের কাছে ভালমানুষ এবং তাহারাই প্ৰভুদিগের প্রসাদ লাভে সমর্থ। আর যাহারা ন্যায় বিচারের প্রত্যাশা করিয়া অপরের জন্য লড়াই করিতে যায়, তাহাদের অদৃষ্ট বিনা মেঘে বজ্ৰাঘাত ঘটে ; মিথ্যা মোকৰ্দমার ফাঁদে পড়িয়া তাহারা অযথা সাজা খাইয়া মরে। ফলে জেলখানায় যত কয়েদী আসে, তাহার মধ্যে একজনও যে জেল খাটার ফলে সচ্চরিত্র হইয়া যায় তাহা মনে করিবার কারণ নাই। : ) বাস্তবিকই কয়েদীদের ভাল করিয়া তুলিবার চেষ্টা সেখানকা । কর্তৃপক্ষদের মোটেই নাই বলিলে চলে। অসচ্চরিত্র লোকদিগন্ধে, সচ্চরিত্র করিয়া তোলাতেই যে জেলখানার সার্থকতা, সে ধারণাও র্তাহাদের আছে বলিয়া মনে হয় না। কয়েদী তাঁহাদের কাছে কাজ করিবার যন্ত্র বিশেষ, আর যে অফিসার কয়েদী ঠেঙ্গাইয়া যত বেশী কাজ