পাতা:নিশীথ-চিন্তা - কালীপ্রসন্ন বিদ্যাসাগর.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নদীর জল । R ইচ্ছা হয়, তাহা হইলে, মথুরী কি বৃন্দাবনের নিকটে, শ্যামসলিলা যমুনার তটে' একবার যাইয়া, নৈশ-নিস্তব্ধতার সময়ে উপবেশন কর । তুমি সেখানে যাহা শুনিতে পাইবে, এ জগতের আর কোথাও? তাহা পরিশ্রুত হইবার নহে। যিনি যমুনার তটে সুখের শৈশব অতিবাহিত করিয়া, যৌবনে এই পৃথিবীতে সর্বপ্রথম প্ৰেম-ভক্তির পবিত্ৰ ধৰ্ম্ম প্রচার এবং ধৰ্ম্ম রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দ্বারা মানব-জাতিকে কৃতাৰ্থ করিয়াছিলেন,-যোগী যাহাকে “যোগেশ্বর,* প্ৰেমিক র্যাহাকে ‘প্রেমের গুরু’), এবং কাঙ্গাল র্যাহাকে ‘কাঙ্গালের ধনী বলিয়া পূজা করিয়াছিল,—যিনি জ্ঞান ও গুণ-গরিমায় পৰ্বত হইতেও উচ্চ, হৃদয়ের গাম্ভীৰ্য্যে সমুদ্র হইতেও গভীর হইয়া জীব-হৃদয়-রঞ্জনে শিশুর ন্যায় মৃদু স্বভাব প্ৰদৰ্শন করিয়াছিলেন, সেই চির-মনোহর শ্যামসুন্দর কৃষ্ণ কত কাল হয় মানব-লীলা সংবরণ করিয়া অন্তহিত হইয়াছেন। কিন্তু যমুনা তঁহাকে পাসরিতে পারিয়াছে কি ? সূৰ্য্য উদিত হইতেছে এবং সূৰ্য অস্ত যাইতেছে,—— চন্দ্র তারা নভোমণ্ডলে প্ৰস্ফুটিত হইয়া পুনরায় লয় পাইতেছে— বৎসরের পর বৎসর, শতাব্দীর পর শতাব্দী, যুগের পর যুগ বহিয়া গিয়াছে, কিন্তু প্ৰেমবিহবলা যমুনা অদ্যাপি সেই প্ৰেমময় কৃষ্ণের প্রাণ-প্রিয় মধুর নাম বিস্মৃতি হইতে পারে নাই। ভক্তি-বিরোধী বৌদ্ধ যমুনার তটে অনন্ত পতাকা উড়াইয়া নিরাশ-জ্ঞানের তত্ত্ব-সঙ্গীত গাইয়াছে। যমুনা সে গীতে কৰ্ণপাত