ডেকে বলছেন—এই গণশা—বাব্লাতলার জমিতে দোয়ার দেওয়া হয়েচে?
গণেশ অমনি হাত কচলাতে কচলাতে বলতো—আজ্ঞে না, বাবাঠাকুর। কাল তো মোটে লাঙল দেলাম—
—হারামজাদা, এতদিন ঘুমুচ্ছিলে নাকে তেল দিয়ে? কবে বলিচি চষ্তে ও ভুঁই!
—জমিতি লাঙল না লাগলি কি ক-অ-রবো বাবাঠাকুর। আজ সাঁজবাতির মদ্যি দোয়ার দিয়ে দেবানি—
—না দিলে জুতিয়ে তোমার আজ হাড় খুলে নোব মনে থাকে যেন।
গণেশদাদা আমরা যেখানে খেলা করচি সেখানে এসে হেসে বলতো—বাবাঠাকুর চটে গিয়েচেন।
আমি বলতাম—ও গণেশদাদা, ইংরিজি জানো?
—ইন্জিরি? কনে থেকে জানবো? মুই কি লেখাপড়া জানি?
—শিখবে?
—শিখিয়ে দাও দাদাঠাকুর তো শিখি—
—শেখো—ওভার মানে ওপর।
—কি?
—ওভার মানে ওপর, উড্ মানে কাঠ, কাউ মানে গরু—
গণেশদাদা মুখস্থ করতে লাগলো। ইউ. পি. পাঠশালায় কুঞ্জ মাস্টারের শেখানো যত বিদ্যা আমার মাথায় ভিড় করে তাদের উগ্রতায় আমাকে ব্যতিব্যস্ত করছিল, তা সবগুলো গণেশদাদার ঘাড়ে না চাপাতে পারলে যেন আমার নিস্তার নেই। সেই থেকে গণেশদাদার ইংরিজি শিক্ষার ভার আমি স্বহস্তে গ্রহণ করলাম। গোটা ওয়ার্ডবুকখানা গণেশদাদাকে কণ্ঠস্থ করাবার সে কী দুঃসাধ্য প্রচেষ্টা আমার। মুখে মুখে শেখানো ছাড়া অবিশ্যি অন্য উপায় ছিল না,
১০৬