পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই আমার ইচ্ছ। আমার উদ্দেশ্য সফল হোল ; শহুরে; বাবুরা ওর দিকে চেয়ে চেয়ে বললে-বাঃ, বাং, এ লোকটি তো বেশ । কি নাম তোমার ? বেশ । এদিকে এসো ওরা চার আন বকশিস করলে তখুনি। অর্থকরী বিদ্যা বটে। ইংরিজি। -- সেই থেকে গণেশদাদার কি উৎসাহ ইংরিজি শেখাবার। সাতদিনের মধ্যে আর এক ডজন শব্দ কণ্ঠস্থ করে ফেললে । আর একদিনের কথা মনে পড়ে। শীতকাল। বাড়িতে রুটি হচ্চে, দুধ আর গুড় দিয়ে খাবো বলে মনে খুব ফুতি । এমন সময় পীতাম্বর রায় জ্যাঠামশায়দের বাড়ি হৈ চৈ শুনে সেদিকে গেলাম। গিয়ে দেখি তার চণ্ডীমণ্ডপের সামনে লোকে লোকারণ্য । পীতাম্বর রায়, হরিশ জ্যাঠামশায়, নবীন চক্রবর্তী প্ৰভৃতি বিশিষ্ট ভদ্রলোকেরা চণ্ডীমণ্ডপে বসে। পীতাম্বর রায় খুব চীৎকার কারচেন ও হাত-পা নাড়চোন। উঠানের মাঝখানে গণেশদাদা মুখ চুন করে দাড়িয়ে রয়েচে । ব্যাপার শুনে বুঝলাম, পীতাম্বর রায়ের একটি গরু আজ দুদিন হারিয়ে গিয়েছিল, আজ সেটা গণেশদাদার বাড়ির পিছনে মুচিপাড়ার বড় আমবাগানে ( যার নাম এ গ্রামে গলায় দড়ির বাগান ) লতা দিয়ে বাধা ছিল এবং তার লেজ কে দা দিয়ে অনেকখানি কেটে দিয়েচে, ঝরঝর করে রক্ত পড়চে লেজ দিয়ে । এই অপরাধের সন্দেহ গিয়ে পড়েচে গণেশদাদার ওপর, কারণ প্রথমতঃ মুচির গরুর চামড়া বিক্রি করে, দ্বিতীয়তঃ গরু গণেশদাদার বাড়ির পিছনে বাধা ছিল, তৃতীয়তঃ গণেশদাদা গরীব। সুতরাং গণেশদাদাই রাত্ৰে গৰুটি কেটে চামড়া খুলে নেওয়ার উদ্দেশ্যে সেটাকে লুকিয়ে রেখেছিল তার বাড়ির পিছনের আমবাগানে। দায়ের কোপও সেই মেরেচে। পীতাম্বর রায়ের ও হরিশ জ্যাঠামশায়ের যুক্তির মধ্যে যে ফাক ছিল, তা কারো চোখে পড়লে না। গণেশদাদার বক্তব্য প্রথমতঃ » ©ኳ”