পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নীলগঞ্জের চারিপাশের পাঁচ ছয় খানি গ্রামের সন্ত্রান্ত ব্ৰাহ্মণ গৃহস্থাদিগের তাহদের মত জিজ্ঞাসা করা হইল-মেম সাহেবের আত্মার মঙ্গল কামনায় যদি ব্ৰাহ্মণ-ভোজনের ব্যৰস্থ হয়, তঁাহারা খাইবেন। কিনা। তখনকার দিনে এসব ধরনের খাওয়ায় সামাজিক কড়াকড়ি অনেক বেশী ছিল, কিন্তু ব্ৰাহ্মণদের রাজি না হইয়া এক্ষেত্রে উপায় ছিল না । সাহেবকে চটাইতে কেহই রাজি নয়। নীলগঞ্জের কাছারি ঘরের সামনে তুততলায় দু'দিন ধরিয়া কালী ময়রা সন্দেশ, বঁদে, পানতুয়া ভিয়ান করিল। কাছারি বাড়ির হলে ব্ৰাহ্মণ-ভোজনের যে বিরাট ব্যবস্থা হইয়াছিল, এ অঞ্চলে সে রকম । খাওয়ানো কখনো কেহ দেখে নাই। ফালমান সাহেব কুঠার গেটে নিজে দাড়াইয়া প্ৰত্যেককে বলিতেছিলেন-পেট আপনাদের ভরেছে ? কষ্ট দেলাম। আপনাদের এনে । কিছু মনে করবেন না আমিও সে দলে ছিলাম, তখন স্কুলের বালক, ভূরিভোজন করিয়া বাহির হইয়া আসিতেছিলাম। দীর্ঘাকৃতি ফালমান সাহেবের সে বিনীত মুখভাব, সৌজন্যপূর্ণ সহৃদয় দৃষ্টি এখনো মনে আছে। মানবতার উদার গতিপথের পার্শ্বে অবস্থিত এই ছবিখানি আজকার এই হিংসা দ্বেষ ও সাম্প্রদায়িক ধর্মমতের দ্বন্দ্বের দিনে বেশী করিয়া স্মরণে উদিত হয়। বারোয়ারি যাত্রার আসরে ফালমান সাহেব সকলের সামনে চেয়ার পেতে বসতেন। যাত্রা গানের অমন ভক্ত দুটি দেখা যেত না । -ও বেয়ালাদার, একটা একালে গৎ ধরে বাবা-জুড়িদের এগিয়ে দাও সাহেবের ফাইফরমাশ খাটিতে খাটিতে যাত্ৰাদলের গাইয়ে বাজিয়ে वडिवठ्ठ । আর কৃষ্ণ সাজিয়া আসিয়া গান ধরিলেই হইল, অমনি মেডেল ঘোষণা । SS