পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নূতনের সন্ধান

বন্ধন শিথিল হইতে আরম্ভ করিল এবং সমাজের বা রাষ্ট্রের উন্নতি অপেক্ষা নিজের মোক্ষ লাভই মানুষের নিকট অধিক শ্রেয়স্কর বলিয়া পরিগণিত হইতে লাগিল।

 আমার নিজের মনে হয় যে স্বার্থপরতা, পরশ্রীকাতরতা ও উচ্ছৃঙ্খলতা প্রভৃতি সমাজ-গঠন-বিরোধী বৃত্তির (anti-social quality) জন্যই আমরা সঙ্ঘবদ্ধভাবে কাজ করিতে পারি না। সঙ্ঘদ্ধভাবে কাজ না করিতে পারার জন্য—কি সামাজিক ক্ষেত্রে, কি ব্যবসায় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে, কি রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে—আমরা কোনওদিকে উন্নতি লাভ করিতে পারিতেছি না। আমি চাই না যে আমাদের জাতীয় অধঃপতনের কারণ সম্বন্ধে আপনারা আমার অভিমত বিনা আলোচনায় গ্রহণ করেন। আমি বরং চাই যে আপনারা যেন সমস্ত জাতির ইতিহাস পাশাপাশি রাখিয়া আলোচনা করেন এবং ঐ আলোচনা হইতে আমাদের অধোগতির কারণ অনুসন্ধান করিয়া বাহির করেন। আমাদের চরিত্রের দোষগুলি সর্ব্বদা যদি চোখের সামনে ধরিয়া রাখিতে পারি, তাহা হইলে সমস্ত জাতি সে বিষয়ে সাবধান হইয়া উঠিবে।

 বিশ্বজগতের এবং মনুষ্যজীবনের ঘটনা পরম্পরার অন্তরালে যে একটা অদৃশ্য নিয়ম নিহিত আছে—এ কথা আমরা অনেকে জানি না বা মনে রাখি না। পাশ্চাত্য মনীষীরা কিন্তু কোনও ঘটনাকে সহজে “আকস্মিক” বা “অদৃষ্টসম্ভূত” বা “দুর্দ্দৈব সঙ্ঘটিত” বলিয়া গ্রহণ

৯৪