পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

যুব-আন্দোলন

করিতে চাহেন না। প্রত্যেক জাতির আদর্শের চরণে নিজেকে আত্মসমর্পণ করিতে হইবে—ঐ আদর্শের অনুসরণে নিজেকে নিঃশেষে বিলাইয়া দিতে হইবে। আদর্শের চরণে আত্মবলিদান করিতে পারিলে মানুষের চিন্তাও কথা ও কার্য্য—এক সুরে বাঁধা হইবে; তাহার ভিতর-বাহির এক হইয়া যাইবে; তাহার সমস্ত জীবন এক আদর্শ সূত্রে গ্রথিত হইবে; সে তখন তাহার জীবনে নূতন রস, নূতন আনন্দ, নূতন অর্থ খুঁজিয়া পাইবে, সমগ্র বিশ্বজগৎ তাহার নিকট নূতন আলোকে উদ্ভাসিত হইয়া উঠিবে।

 আমি আজিকার এই অভিভাষণে ব্যক্তিগত সাধনার উপর বেশী জোর দিতেছি না। তার কারণ এই যে ভারতবাসী কোনও দিনই ব্যক্তিগত সাধনা ভুলিয়া যায় নাই। ব্যক্তিত্ব-বিকাশের চেষ্টা আমরা কোনও দিনই ত্যাগ করি নাই। অবশ্য পাশ্চাত্য দেশের বা অন্যান্য দেশের ব্যক্তিত্বের আদর্শ এবং আমাদের দেশের ব্যক্তিত্বের আদর্শ এক নয়। কিন্তু আমাদের বর্ত্তমান পরাধীনতা ও সকল প্রকার দুর্দ্দশার মধ্যে যে আমাদের দেশে কত মহাপুরুষ জন্মাইয়াছেন এবং এখনও জন্মাইতেছেন তাহার একমাত্র কারণ এই যে খাঁটি মানুষ সৃষ্টির প্রচেষ্টা আমাদের জাতি কোনও দিন ভুলে নাই। কিন্তু আমরা ভুলিয়া গিয়াছিলায় Collective Sadhana বা সমষ্টিগত সাধনা; আমরা ভুলিয়া গিয়াছিলাম যে জাতিকে বাদ দিয়া যে সাধনা—সে সাধনার কোনও সার্থকতা নাই। তাই সমাজ-গঠন-বিরোধী

৯৫