পাতা:নেতাজীর জীবনী ও বাণী - নৃপেন্দ্রনাথ সিংহ.pdf/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৬
সুভাষচন্দ্রের জীবনী ও বাণী

থাকে অথবা আমাকে প্রতারিত বা প্রলুব্ধ করিতে সমর্থ না হয়, তবে পৃথিবীর কোন শক্তি আমাকে প্রতারিত করিতে পারিবে না। সুতরাং আমাকে বিশ্বাস করুন স্বাধীনতা সংগ্রামে যদি বাহিরের সাহায্য আপনারা চাহেন, তবে এক্সিস শক্তির সাহায্য আপনারা পাইবেন।

 যদি বাহিরের সাহায্য ব্যতীতই আপনাদের চলে, তবে তাহা ভারতের পক্ষে সবচেয়ে ভাল ব্যবস্থা। ব্রিটিশ সরকার যদি পৃথিবীর এমন কি দাসত্ব শৃঙ্খলে শৃঙ্খলিত, দরিদ্র, নিপীড়িত ভারতের জনগণের নিকটও ভিক্ষার ঝুলি লইয়া বাহির হইতে পারে, তবে বাহিরের নিকট হইতে সাহায্য লইতে যদি আমরা বাধ্য হই, তবে তাহা অন্যায় হইবে না।

 পূর্ব্ব এশিয়ার ভারতীয়রা ভারতে ব্রিটিশ সৈন্য বাহিনীকে আক্রমণ করিবার জন্য এক শক্তিশালী সৈন্য বাহিনী গঠন করিতেছে। যখন আমরা তাহাদিগকে আক্রমণ করিব, তখন আমাদের দেশে জনগণের মধ্যেই শুধু বিপ্লব হইবে না, তখন ব্রিটিশ পতাকাতলে সমবেত ভারতীয় সৈন্যবাহিনীর মধ্যেও বিপ্লবের বহ্ণি জ্বলিয়া উঠিবে। যখন ব্রিটিশ সরকার এইভাবে দুইদিক অর্থাৎ ভিতর ও বাহির হইতে আক্রান্ত হইবে, তখন উহ ভাঙ্গিয়া পড়িবে এবং ভারতের জনগণ পুনরায় স্বাধীনতা ফিরিয়া পাইবে। ভারত সম্পর্কে এক্সিস শক্তির মনোভাব লইয়া মাথা ঘামাইবার কোন প্রয়োজন নাই। যদি বিদেশে ভারতীয়গণ এবং দেশে জনগণ তাহাদের কর্ত্তব্য পালন করে, তবে ব্রিটিশকে ভারত হইতে তাড়াইয়া দেওয়া ভারতীয় জনগণের পক্ষে সম্ভব হইবে এবং তাহাদের ৩৮ কোটি ৮০ লক্ষ দেশবাসীকে মুক্ত করা সম্ভব হইবে।