পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 এদিকে আন্দামানের রাজবন্দীদের অনশন-ধর্মঘট আরম্ভ হয়ে গিয়েছিল এই সময়ে। জনসাধারণ, আশা করছিল কংগ্রেস এইবার বিরাট এক আন্দোলন চালিয়ে গভর্ণমেণ্টকে হার মানাতে বাধ্য করবে। পরিণামে হয়ত তাই হত কিন্তু কেন জানি না কংগ্রেস ব্যপারটা অত্যন্ত দেরী করে ফেলছিল। তাতে জনসাধারণ যে ভেতরে ভেতরে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। এই সময়ে তাই সুভাষবাবুর মত বিপ্লবী নেতার প্রয়োজন খুবই অনুভূত হয়েছিল। এবং সুভাষবাবু এই সময়ে অত্যন্ত সহজে এবং অত্যন্ত বেশীরকমের জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন।

 কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্যে তাঁকে আবার ইউরোপ যেতে হল কিছুদিনের জন্য, সে কথা আগেই বলা হয়েছে। এবং ইউরোপে গিয়ে তিনি আবার ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতা দাবীর প্রশ্ন নিয়ে বক্তৃতা ও প্রচারকার্য শুরু করে দিলেন। তখন কংগ্রেসের এই ত্রয়ী নেতার দল ভাল ভাবেই উপলব্ধি করতে পারলেন যে আর তাঁকে অবহেলা করা যাবে না। যে কোন উপায়েই হোক তাঁর সঙ্গে মিটমাট করে ফেলা দরকার। কংগ্রেসের মনোভাবের বিরুদ্ধে এই তীব্র বক্তৃতা, এ সমস্তই একেবারে চেপে গিয়ে তাঁরা স্বেচ্ছায় সুভাষবাবুকে কংগ্রেসের শ্রেষ্ঠ সম্মান দেবার জন্যে আমন্ত্রণ পাঠালেন। প্রস্তাবিত আজাদ, জওহরলাল ও গফুর খাঁর নাম বর্জন করে সুভাষবাবুকেই ১৯৩৮ সালের কংগ্রেস সভাপতির পদ দেওয়া হল! তাঁর স্বাস্থ্য খুব ভাল না থাকালেও ১৪ই জানুয়ারী ১৯৩৮ সালে তিনি বিমানপথে দেশে প্রত্যাবর্তন করলেন। করাচী বিমান ঘাঁটিতে তাঁকে বিপুল সম্বর্ধনা জানানো হল। মহাত্মাজী থেকে আরম্ভ করে সমস্ত নেতা তাঁকে অভিনন্দিত করলেন।

 তাপ্তী নদীর ধারে হরিপুরায় নব নির্মিত কংগ্রেস নগর—বিঠলনগরে কংগ্রেসের অধিবেশন শুরু হল। কংগ্রেসের এই একান্নতম অধিবেশনে কংগ্রেস

৪৮