পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

যাচ্ছে। কিন্তু আমার মতে একটি দলের উপর দায়িত্ব থাকলেও অন্যান্য দলেরও অস্তিত্বের সমান দাবী আছে, তাহলেই প্রকৃত গণতন্ত্রের ভিত্তিতে কাজ চালানো যেতে পারে। উপরন্তু গণতন্ত্রের ফলে দেশের সর্বনিম্ন সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে নেতৃনির্বাচন চলতে পারে সমাজের শুধু উপরের স্তর থেকে নয়।······কংগ্রেসের মধ্যে সমাজতান্ত্রিক দলের উদ্ভব নিয়ে খুব বাদানুবাদ চলছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এই দলের সভ্য নই তবে একথা বলা ভাল যে গোড়া থেকেই এর মূল উদ্দেশ্য সম্বন্ধে আমার সমর্থন আছে। আপনারা একে কোন দল বলুন, পার্টি বলুন, লীগ বলুন, আর গ্রুপই বলুন আমার মতে সমস্ত বামপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কংগ্রেসের পতাকা তলে কংগ্রেসের অনুশাসনের মধ্যে সমাজতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাজ করা উচিৎ—সে অধিকার তাদের আছে।······ সমাজতন্ত্রবাদই আমাদের সম্মুখ সমস্যা নয়—দেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশকে সমাজতন্ত্রবাদ অনুযায়ী পরিচালনা করবার জন্যে এখন থেকেই খানিকটা প্রচারকার্য করা মাত্র।

 দেখা যাচ্ছে সোশ্যালিষ্ট দলকেও তিনি সমর্থন করছেন অথচ কংগ্রেস থেকে বিচ্ছিন্ন করে নয়। তাঁর নিজস্ব মতবাদ একটি মাত্র দলের কর্তৃত্ব সম্বন্ধেও যেমন তিনি জোর দেন নি তেমনি আবার কংগ্রেসের মধ্যে বহু দলের ঐক্যের ব্যাপারেও তিনি উদাসীন ন’ন। এমন কি সর্বশেষে তিনি গান্ধীজীকে যেভাবে সশ্রদ্ধ অভিবাদন জানালেন তাতে সকলেই স্তম্ভিত হয়ে গেলেন। পরিশেষে তিনি বললেন, ভারতবর্ষে এখনও বহুদিন গান্ধীজীর প্রয়োজন আছে। আমাদের সঙ্ঘবদ্ধ রাখবার জন্যে তাঁকে প্রয়োজন। আমাদের মুক্তি সংগ্রামকে সমস্ত হিংসা ও বিবাদ থেকে মুক্ত রাখবার জন্যে তাঁকে আমাদের প্রয়োজন। ভারতের স্বাধীনতার যুদ্ধের জন্যে তাঁকে আমরা চাই। সর্বোপরি সমস্ত মানবজাতির কল্যাণের জন্য তাঁকে প্রয়োজন। আমাদের সংগ্রাম শুধু বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে নয় সমগ্র জগতের সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে।·····ভারতের স্বাধীনতা সমস্ত মানবজাতির রক্ষা কবচ! বন্দেমাতরম্!

৫২