পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

যখন ধ্বংস হতে চলেছে অন্যদিকে শত্রুপক্ষ খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। এই সময়ে তাদের সাহায্য নিয়ে যদি বৃটিশকে পরাজিত করতে পারা যায় তাহলে ভারতবর্ষ নিশ্চয়ই স্বাধীনতা লাভ করবে। ভারতবর্ষ বৈদেশিক শক্তির সাহায্য ছাড়া স্বাধীনতা অর্জন করতে পারবে না। তারা সিং এতে আপত্তি জানিয়েছিলেন এই বলে যে, ভারতবর্ষ হয়ত এই উপায়ে জয়লাভ করতে পারে কিন্তু ভবিষ্যতে হয়ত সেই বৈদেশিক শক্তি ভারতীয়দের নিজেদের হুকুম মত চালাতে সুরু করতে পাবে, তার ফলে স্বাধীনতা লাভ হবে না কেবল শাসকের পরিবর্তন হবে মাত্র। সুভাষবাবু জবাব দিলেন, বিপদ সব সময়েই থাকবে কিন্তু আমরা বিপদের ঝুঁকি নিতে কখনই কুণ্ঠিত হব না; আমরা আমাদের সঙ্কল্প সিদ্ধ করতে পারি। তারপর তারা সিংএর ওপর আস্থা দেখিয়ে বলেন, বৃটিশ সৈন্যবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত শিখ সৈন্যেরা আপনাকে শ্রদ্ধা করে এবং তারা সরাসরি আপনার অনুগত। শিখেরা বীর জাতি, আমি আশা করি ভবিষ্যতে যখন প্রয়োজন হবে, ডাক যখন আসবে তখন শিখেরা আমাকে সাহায্য করবে, আমার পাশে এসে দাঁড়াবে। উত্তরে তাবা সিং জানান যে সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিন্ত হতে পারেন, শিখেরা সববিষয়ে তাঁর আদেশ অনুসরণ করে যাবে।

 তারপর তাঁদের মধ্যে অনেকক্ষণ ধবে আলোচনা চলে। শেষে সুভাষ বাবু জানান যে তাঁর কাছে এক বাঙ্গালী ভদ্রলোক সুভাষবাবুর বাণী বহন করে নিয়ে আসবে এবং ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’ এই সাঙ্কেতিক শব্দ উচ্চারণ করলেই তাঁকে বিশ্বাস করে আদেশ মত কাজ যেন তিনি করেন। এবং তারা সিং একথাও জানিয়েছেন যে তারপর সুভাষবাবু যখন কাবুলের পথে ভারত ত্যাগ করছিলেন সেই সময়ে সত্যিই এক ভদ্রলোক ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’ বলে তাঁর কাছে এসেছিলেন।

 সম্প্রতি সুভাষবাবুর পলায়ন সংস্পর্শে থাকার দরুণ একজন ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁর কাছে অনেক খবর পাওয়া গেছে। তার মতে আসলে ১৯৪০ সালের ১৩ই ডিসেম্বর সুভাষবাবু কোলকাতা পরিত্যাগ করেন। তিনি প্রথমে

৮২