পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ৯ই এপ্রিল স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস্ ঘোষণা করলেন যে সুভাষবাবু অক্ষশক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন এবং ইউরোপে অবস্থানকালে আজাদ হিন্দ ফৌজের শাখা গঠন করেছেন।

 মোট কথা এ কথাটা স্পষ্ট করে জানা গেল যে সুভাষবাবু অক্ষশক্তির সঙ্গে যোগ দিয়ে বিরাট একটা পরিকল্পনাকে বাস্তব রূপ দিতে চেষ্টা করছেন।

 স্বাধীনতার জাহ্নবীধারাকে অপার্থিব স্বপ্ন-রাজ্যের স্বর্গ থেকে বাস্তবের মাটিতে—শৃঙ্খলিত ভারতভূমিতে নামিয়ে আনতে কোন দুর্গমে তপস্য। সুরু করেছে বিংশ শতাব্দীর ভগীরথ—!

 ১৯৪৩ সালের মে/জুন মাসে সম্ভবতঃ সাবমেরিণযোগে সুভাষবাবু জাপানে প্রেরিত হন। ৭ই জুলাই চুংকিং সংবাদে তাঁর সিঙ্গাপুবে অবস্থানের কথা প্রথম ঘোষিত হয়।

 এর পর থেকেই আজাদ-হিন্দ ফৌজের গৌরবময় ইতিহাসের শুরু। কিন্তু সে ইতিহাসের গর্বিত অধ্যায়ের আগে আমাদের তদানীন্তন পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর অবস্থা সম্বন্ধে খানিকটা ধারণা থাকা দরকার। কারণ এই প্রপীড়িত হতভাগ্য ভাবতীয়দের এবং অন্যান্য স্থানীয় অধিবাসীদের নির্মম জীবনকাহিনীর মসীলিপ্ত পটভূমিকাতেই স্বপ্নোজ্বল সূর্যোদয় সম্ভব হয়েছিল।

 কিছুক্ষণের জন্য অতীতের সেই কালো ইতিহাসে আমরা নেমে চলি। সেই কালো ইতিহাসের পুঞ্জ পুঞ্জ কালো মেঘেই ত বিপ্লবের ঝড় উঠবে!

 এত অল্পদিনের মধ্যে এতবড় একটা কাহিনী যে গড়ে উঠতে পারলো তার মূলে আছে সুভাষবাবুব অসাধারণ কর্মক্ষমতা এবং যারা যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের অতুলনীয় আত্মত্যাগ সন্দেহ নেই, কিন্তু তার মূলে আছে আরও একটি বড় বস্তু যার ফলে এই অভিযান এত সহজে সম্ভব হতে পেরেছিল। সে বস্তুটি হল মালয় ও ব্রহ্মদেশের প্রবাসী ভারতীয়দের ঐকান্তিক সহযোগিতা। এই যে আন্তরিক

৮৬