পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩০
নেতাজী সুভাষচন্দ্র

 স্বয়ং হিট লার পর্য্যন্ত সুভাষচন্দ্রকে যে সম্মান প্রদর্শন করিয়াছিলেন, তাহাতে স্পষ্টই প্রমাণিত হইয়াছে যে, বীরের মর্য্যাদা সর্ব্বত্রই স্বীকৃত হইয়া থাকে। তিনি তাঁহার সৈন্যদিগকে সম্বোধন করিয়া বলিয়াছিলেন, “মনে রাখিও আমি এক ক্ষুদ্র দেশের ‘ফুরার’ বা অধিনায়ক, কিন্তু তিনি এক বিশাল দেশের ‘ফুরার’। সুতরাং তাঁহাকে তদ্রূপ সম্মান প্রদর্শনে কার্পণ্য করিও না।”

 এস্থলে ইহা বলিলে প্রাসঙ্গিক হবে না যে, প্রাচ্য রণাঙ্গনে এসিয়া মহাদেশে যখন শ্রীযুক্ত রাসবিহারী বসু ও ক্যাপ্টেনমোহন সিংএর নেতৃত্বে ভারতের মুক্তিকামী একদল আজাদ-হিন্দ ফৌজ গড়িয়া উঠিতেছিল, সুভাষচন্দ্রের নেতৃত্বে পাশ্চাত্ত্যে ইয়োরোপের রণাঙ্গনেও তখন অপর একদল আজাদ-হিন্দ ফৌজ গঠিত হইয়াছিল। জার্ম্মাণগণ তাহাদিগকে “ফ্রী ইণ্ডিয়ান” নামে অভিহিত করিয়াছিলেন।

 ভারতীয় যুদ্ধবন্দীদের মধ্য হইতেই এই মুক্তিকামী সৈন্যদল গড়িয়া উঠিয়াছিল। ইহাদের মোট সংখ্যা ছিল ৩৫০০ এবং ১৫টি কোম্পানীতে বিভক্ত ছিল।

 নেতাজী সুভাষচন্দ্র জার্ম্মাণ গভর্ণমেণ্টকে সুস্পষ্ট ভাবে এই নির্দ্দেশ দিয়াছিলেন যে, আজাদ-হিন্দ ফৌজকে যেন কেবল ইংরেজ ও আমেরিকানদের বিরুদ্ধেই নিয়োজিত করা হয়, রুশ বা অপর কোন জাতির বিরুদ্ধে যেন তাহাদিগকে ব্যবহার করা না হয়। নেতাজীর এই নির্দ্দেশ অক্ষরে অক্ষরে প্রতিপালিত হইয়াছিল।