পদার্পণ করিয়াই সর্ব্বাগ্রে নেতাজীর গৃহে উপস্থিত হইলেন; তারপর নেতাজীর ক্ষুদ্র কক্ষে প্রবেশ করিয়াই তিনি যে দৃশ্যের সৃষ্টি করিয়াছিলেন, আজও তাহা মনে হইলে নয়নযুগল হইতে যেন গঙ্গা-যমুনার পুণ্য-প্রবাহ নামিয়া আসে!
সুসাহিত্যিক শ্রীযুক্ত বিজয়রত্ন মজুমদার মহাশয় তাঁহার অমর লেখনী-নিঃসৃত স্বর্ণাক্ষরে তাহা যে ভাবে গাঁথিয়া রাখিয়াছেন, আমরা তাহারই সামান্য কিছু অংশমাত্র পাঠক-পাঠিকাদিগকে উপহার দিতেছি।
“সেই কক্ষ। এই কক্ষ-সন্নিধানে সেদিনও জনতা জমিত, আজও জনতা অপেক্ষমান! কেদারার উপরে সুভাষের সেই ছবিখানি!
শা নওয়াজ খাঁ ভদ্র ও ভাল মানুষটির মত সিঁড়ি দিয়া উঠিলেন, তারপর গৃহে প্রবেশ করিয়া সেই ছবি—তাঁহার নেতাজীর সেই ছবিখানি সবলে বুকে চাপিয়া ধরিয়া, সে কি বালকের কান্না! সেকি নারীর ক্রন্দন! কোথায় ছিল এত জল? পাষাণের তলে সাগরের উচ্ছ্বাস কত দিন ছিল, লুকানাে; কতকাল ছিল, গােপনে? অবরােধে? কে উন্মুক্ত করিয়া দিল অশ্রুর উৎস?
সুভাষের সেই শয্যা! শ নওয়াজ খাঁ খাটের নীচে জানু পাতিয়া শয্যায় মুখ লুকাইলেন; চোখের জলে চাদর ভিজিল; উপাধান সিক্ত হইল।—
মেজর-জেনারেল শা নওয়াজ তখনও চাদরে মুখ ঘসিতেছেন, আর অতি মৃদু, অতি ধীর, অপরাধীর কণ্ঠে