পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
নেতাজী সুভাষচন্দ্র

 কলিকাতা হইতে চল্লিশ মাইল দূরে এক রেলওয়ে স্টেশন পর্য্যন্ত তিনি এই ভাবে মোটরে চলিয়া যান। তারপর একখানি দ্বিতীয় শ্রেণীর টিকিট—পেশোয়ার পর্য্যন্ত—কিনিয়া লইয়া তিনি ট্রেণে উঠিয়া বসেন।

 রাত্রিটা বেশ নির্ব্বিঘ্নেই কাটিয়া গেল; কিন্তু পরদিন একজন শিখ আরোহী ঐ দ্বিতীয় শ্রেণীর কামরায় উঠিয়া, সুভাষচন্দ্রের প্রায় মুখোমুখি হইয়া বসিলেন।

 কয়েকবার বেশ তীক্ষভাবে সুভাষচন্দ্রের দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনি কোথায় যাইতেছেন? আর কি আপনার পরিচয়?”

 সুভাষচন্দ্র কহিলেন, “আমার নাম জিয়াউদ্দিন, আমি একজন জীবন-বীমা কোম্পানীর অর্গানাইজার। আমি লক্ষ্ণৌ হইতে আসিতেছি, রাওয়ালপিণ্ডি যাইব।”

 শিখ ভদ্রলোক তাঁহার সেই কৈফিয়ৎ শুনিলেন বটে, কিন্তু বিশ্বাস করিলেন কিনা, কে জানে? যাহা হউক্, সুভাষচন্দ্র অনেকটা সন্ত্রস্তভাবেই রহিলেন; এবং গাড়ী যখনই কোন ষ্টেশনে উপস্থিত হইতেছিল, সুভাষচন্দ্র জনতার দৃষ্টি হইতে নিজেকে যথাসাধ্য গোপন করিবার জন্য, সংবাদপত্র পড়িবার ছলে, তাহারই পশ্চাতে নিজের মুখমণ্ডল ঢাকিয়া রাখিতেছিলেন।

 এইভাবে বাকি পথটা কাটিয়া গেল। অবশেষে ১৭ই জানুয়ারী রাত্রি ৯টার সময় তিনি পেশোয়ার পৌঁছিলেন।

 পূর্ব্ব-বন্দোবস্ত অনুসারে একখানি মোটরগাড়ী তাঁহার জন্য